খালেদা জিয়াসহ ১৬ বিবাদীর সাক্ষ্য গ্রহণ পেছাল
ঋণখেলাপি মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ ১৬ বিবাদীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়েছে। আগামী ৭ আগস্ট এ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার প্রথম অর্থঋণ আদালতের বিচারক ফাতেমা ফেরদৌসের আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন নির্ধারিত ছিল। কিন্তু মামলার বিবাদীদের পক্ষে তাঁদের আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া সাক্ষ্য গ্রহণের কার্যক্রম পেছানোর জন্য সময়ের আবেদন করেন।
আবেদনে বলা হয়, ইস্যু গঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন দাখিল করা হয়েছে। ওই রিট নিষ্পত্তি হলেও আদেশ এখানো পাওয়া যায়নি। তাই সময় আবশ্যক।
এই আবেদনের ওপর ভিত্তি করে বিচারক সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে আবারো নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন।
মামলাটিতে গত ২২ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ১৬ বিবাদীর বিরুদ্ধে ইস্যু গঠন করেন একই আদালত।
গত বছরের ১৪ জুলাই খালেদা জিয়ার পক্ষে একই আদালতে জবাব দাখিল করেন তাঁর আইনজীবী মাসুদ আহম্মদ তালুকদার, সানাউল্লাহ মিয়া ও জয়নাল আবেদীন মেজবাহ।
এ মামলায় গত বছরের ১২ এপ্রিল খালেদা জিয়া, তাঁর ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান এবং দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমানসহ চারজনকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি করেছিলেন ঢাকার প্রথম অর্থঋণ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক রোকসানা আক্তার হ্যাপি।
এ মামলাটির শুরুতে খালেদাসহ চারজন বিবাদীভুক্ত ছিলেন না। আরাফাত রহমানের মৃত্যুর কারণে ইসলামী শরিয়াহ আইনের বিধান মোতাবেক উত্তরাধিকারী হিসেবে তাঁরা বিবাদীভুক্ত হন। গত বছরের ১৬ মার্চ আদালত তাঁদের বিবাদীভুক্ত করেন।
এর আগে, গত বছরের ৮ মার্চ খালেদাসহ অন্যদের বিবাদীভুক্ত করার জন্য ঢাকার প্রথম অর্থঋণ আদালতে আবেদন জানান সোনালী ব্যাংকের আইনজীবী জাহাঙ্গীর হোসেন।
২০১৩ সালের ২ অক্টোবর বিবাদীদের বিরুদ্ধে ৪৫ কোটি ৫৯ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৫ টাকা ঋণ খেলাপির অভিযোগে মামলা করেন সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল স্থানীয় কার্যালয় শাখার সিনিয়র নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, বিবাদীরা ড্যান্ডি ডাইংয়ের পক্ষে ১৯৯৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সোনালী ব্যাংকে ঋণের জন্য আবেদন করেন। ওই বছরের ৯ মে সোনালী ব্যাংক বিবাদীদের আবেদনকৃত ঋণ মঞ্জুর করেন। এরপর ২০০১ সালের ১৬ অক্টোবর বিবাদীদের আবেদনক্রমে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ সুদ মওকুফ করে।
বিবাদীদের আবেদনক্রমে ঋণ পুনঃতফসিলীকরণও করা হয়। কিন্তু বিবাদীরা ঋণ পরিশোধ না করে ক্রমাগত কালক্ষেপণ করতে থাকেন।
এ ছাড়া আরো অভিযোগ করা হয়, ২০১০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি ব্যাংকের পক্ষ থেকে ঋণ পরিশোধের জন্য চূড়ান্ত নোটিশ দেওয়া হলেও বিবাদীরা কোনো ঋণ পরিশোধ করেননি।
এ মামলার বিবাদীরা হলেন ড্যান্ডি ডাইং লিমিটেড, প্রয়াত সাঈদ এস্কান্দারের ছেলে শামস এস্কান্দার ও সাফিন এস্কান্দার, মেয়ে সুমাইয়া এস্কান্দার, স্ত্রী বেগম নাসরিন আহমেদ, তারেক রহমান, আরাফাত রহমান কোকো, গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, মামুনের স্ত্রী শাহীনা ইয়াসমিন, কাজী গালিব আহমেদ, শামসুন নাহার ও মাসুদ হাসান।
এ মামলার ১০ নম্বর বিবাদী মোজাফফর আহমেদ মারা গেলে তাঁর স্ত্রী শামসুন্নাহার ও ছেলে মাসুদ হাসানকে বিবাদীভুক্ত করা হয়।