হবিগঞ্জে শিশুকে ধর্ষণ ও হত্যায় আসামির স্বীকারোক্তি
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলার উত্তরসুর গ্রামের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সুলতানা আক্তারকে (৯) অপহরণের পর ধর্ষণ করে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন আসামি বাবলু মিয়া (৩০)।
গতকাল রোববার হবিগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম কাউছার আলমের আদালতে জবানবন্দি দেন বাবলু। রাতে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আ স ম শামসুর রহমান ভূঁইয়া।
বাবুলে জবানবন্দির কথা উল্লেখ করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আ স ম শামসুর রহমান ভূঁইয়া জানান, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বাবলুর ভাই এলাছ মিয়া ও সুলতানার চাচা হারুণ মিয়া মেম্বার পদে নির্বাচন করেন। এতে দুজনই পরাজিত হন। সুলতানার চাচা ও বাবা আফজল মিয়ার কারণেই নির্বাচনে পরাজিত হতে হয়েছে বলে মনে করেন এলাছ মিয়া ও তাঁর সমর্থকরা। এ ধারণার পরিপ্রেক্ষিতে আফজল মিয়া ও তাঁর ভাইয়ের কোনো এক সন্তানকে অপহরণ করে হত্যা করতে এলাছ মিয়া তাঁর লোকজনকে দায়িত্ব দেন। দায়িত্ব পেয়ে এলাছ মিয়ার ভাই অলিউর রহমান ও বাবলু মিয়াসহ তাঁদের লোকজন আফজল মিয়ার মেয়ে সুলতানাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।
পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, গত ১৬ আগস্ট দুপুর ২টার দিকে সুলতানা কেরোসিন তেল কেনার জন্য বাড়ি থেকে উপজেলা সদর সংলগ্ন হামিদনগর বাজারে যায়। পথে বাবলু, অলি মিয়া, মুগকান্দির সিজিল মিয়া, হামিদনগরের সিজিল, মুখলেছ ও শামীম গামছা দিয়ে সুলতানার মুখ বেঁধে তাকে অপহরণ করে। তারা মেয়েটিকে নিয়ে যায় বাবলুর বাড়িতে। বাবলুর স্ত্রী বাড়িতে ছিল। ওই দিন রাতে মেয়েটিকে বাবলুসহ ওই ছয়জন ধর্ষণ করে। ধর্ষণের একপর্যায়ে মেয়েটি মারা যায়।
সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আরো জানান, তিনদিন সুলতানার লাশ লুকিয়ে রাখে আসামিরা। পরে ১৯ আগস্ট সকালে উত্তরসুর গ্রামের ফজলু মিয়ার ধানক্ষেতে লাশটি ফেলে পালিয়ে যায় তারা। এ ঘটনায় ব্যবহৃত সিএনজিচালিত অটোরিকশা জব্দ করা হয়েছে। গত শনিবার ভোররাতে হবিগঞ্জের গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অভিযান চালিয়ে বাবলু ও সিজিল মিয়াকে আটক করে। খুব শিগগির অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) সুদীপ্ত রায়, সহকারী পুলিশ সুপার সাজিদুর রহমান, সহকারী পুলিশ সুপার রাসেলুর রহমান, ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজমিরুজ্জামান প্রমুখ।
নিহত সুলতানার বাবা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেন, এর আগে আসামিরা তাঁর ভাতিজাকে অপহরণের চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়। পরবর্তী সময়ে তারা সুলতানাকে অপহরণ করে হত্যা করে। এ ঘটনায় নিহত সুলতানার বাবা বাদী হয়ে বাহুবল থানায় মামলা দায়ের করেছেন।