প্রেম করে বিয়ের ২ মাসের মাথায় কলেজছাত্রী খুন
হবিগঞ্জে প্রেম করে বিয়ের দুই মাসের মাথায় শ্বশুরবাড়িতে খুন হয়েছে জলি আক্তার নামের এক কলেজছাত্রী। পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য জলির দুই জা ও এক ননদকে আটক করেছে।
পুলিশ ও নিহত জলির পারিবারিক সূত্র জানায়, হবিগঞ্জ সদর উপজেলার শায়েস্তাগঞ্জ পৌর এলাকার নিজগাঁও গ্রামের আরব আলীর মেয়ে শায়েস্তাগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রী জলি আক্তারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন মাধবপুর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আইয়ুব আলীর ছেলে রংমিস্ত্রি মঙ্গল মিয়া (২২)। শায়েস্তাগঞ্জ এলাকায় রংমিস্ত্রির কাজ করতে এসে জলির সঙ্গে মঙ্গল মিয়ার পরিচয় থেকে প্রেম হয়। একপর্যায়ে তাঁদের সম্পর্কের বিষয়টি জলির পরিবারের লোকজন জানতে পারলে তাঁরা জলিকে গালমন্দ করেন। এ পরিস্থিতিতে জলি প্রেমিক মঙ্গল মিয়ার সঙ্গে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় জলির বাবা আরব আলী শায়েস্তাগঞ্জ থানায় মঙ্গল মিয়াসহ তাঁর সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। পরে মুরুব্বিদের মধ্যস্থতায় মান-সম্মানের কথা ভেবে জলির বাবা এ সম্পর্ক মেনে নেন। দুই মাস আগে সামাজিকভাবে তাঁদের বিয়ে দেওয়া হয়।
সম্প্রতি মঙ্গল মিয়া ও তাঁর পরিবারের লোকজন বিভিন্ন কারণে জলির ওপর নির্যাতন চালান। বিষয়টি জলি তাঁর বাবাকে একাধিকবার জানিয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে জলি তাঁর মামা নাসির মিয়াকে জানান, শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁকে মারপিট করছে। এর পর থেকে তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। ওই দিন রাত ২টায় মঙ্গল মিয়া ফোন করে জলির স্বজনদের জানান, জলি বিষপান করেছেন।
খবর পেয়ে শুক্রবার বিকেলে মঙ্গলের বাড়িতে গিয়ে জলিকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান তাঁর স্বজনরা। এ সময় মঙ্গল মিয়ার দুই ভাবি ছাড়া পরিবারের অন্য সদস্যরা গা ঢাকা দেন। এতে তাঁদের সন্দেহ হলে বিষয়টি তাঁরা মাধবপুর থানার পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে উপপরিদর্শক (এসআই) মমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সেই সঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মঙ্গল মিয়ার দুই ভাবি ও তাঁর বোনকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
জলির মামা নাসির মিয়া এনটিভি অনলাইনকে জানান, জলিকে গলা টিপে হত্যা করেছেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। তাঁর নাক-মুখ দিয়ে রক্ত ঝরছিল বলেও তিনি জানান।
এ ব্যাপারে এসআই মমিনুল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।