ফুলে ফুলে সেজেছে বান্দরবান
গ্রীষ্মের এই আগুনঝরা দিনে বান্দরবান গেলে ভ্রমণকারীদের মনে হতেই পারে পাহাড়ি পথে যেন লেগেছে লাল-নীল-সোনালি রঙের আগুন। তবে এ আগুনে কোনো কৃত্রিমতা নেই, এ যে প্রকৃতির রূপের আগুন-ফুলের শোভা। রাস্তার দুই পাশে কৃষ্ণচূড়ার রূপ দেখে কেউ মুগ্ধ হয়ে কেউবা হয়তো ভাবতে বসবেন লাল বেনারসি পরা নববধূর সজ্জায় কারো অপেক্ষায় আছে পর্যটন শহর বান্দরবান।
পর্যটকে মুখরিত জেলাটির প্রবেশপথ বান্দরবান-চট্টগ্রাম সড়কের হলুদিয়া থেকে জেলা শহর পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে এখন শোভা পাচ্ছে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, অশোক, সোনালু, জারুল, চম্পা, কড়ইসহ নানা রঙ, রূপ আর ঘ্রাণের ফুল। বেড়াতে আসা পর্যটকরাও ফুলে সাজানো বান্দরবান দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন। urgentPhoto
ফুলের রূপে মুগ্ধ এমন দুজন পর্যটক শ্রাবন্তি ও শাহরিয়ার। বান্দরবানে মধুচন্দ্রিমায় আসা এ দম্পতি প্রতিবেদককে বলেন, ‘পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে এসে ফুলে ফুলে সাজানো বান্দরবান দেখলাম, সত্যিই অসাধারণ। বিশেষ করে সোনালু ফুলের সোনালি রং এবং কৃষ্ণচূড়ার লালরাঙা সৌন্দর্যের বর্ণনা করা অসম্ভব।’
২০০৩ সালে তৎকালীন জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান ভূঁইয়া ও বান্দরবান বিভাগীয় বন কর্মকর্তা অবনীভূষণ ঠাকুর শহরের প্রবেশদ্বার হলুদিয়া থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের গাছ লাগান।
এরই ধারাবাহিকতায় তৎকালীন জেলা পুলিশ সুপার কামরুল ইসলামও প্রধান সড়কসহ পৌর শহরের রাস্তার দুই পাশে ফুলের গাছ লাগান। কয়েক বছরের মধ্যে গাছগুলো বেড়ে উঠে বসন্ত ও গ্রীষ্মে পাল্টে দেয় শহরের চিরচেনা দৃশ্য।
বান্দরবান রেসিডেনশিয়াল হোটেল অনার্স অ্যাসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম মনে করেন, বান্দরবানকে ফুলের শহর হিসেবে গড়ে তোলার বহুদিনের স্বপ্ন এখন বাস্তবে পরিণত হয়েছে। এ উদ্যোগ ও পরিকল্পনা পাহাড়ি এ জেলার সৌন্দর্যকে আরো প্রস্ফুটিত করেছে। দূর থেকে মনে হয় যেন পর্যটকদের স্বাগত জানাচ্ছে বর্ণিল ফুল গাছগুলো।
জেলা হর্টিকালচারের পরিচালক রফিকুল ইসলাম বলেন, পর্যটন শহরের সৌন্দর্যবর্ধনের রাস্তার দুই পাশে লাগানো অনেক গাছ মরে গেছে। শূন্য স্থানগুলো চিহ্নিত করে নতুন করে আরো গাছ লাগানো দরকার। একই সঙ্গে বেড়ে ওঠা গাছগুলোর রক্ষণাবেক্ষণে দরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ।
তবে বন বিভাগের বিভাগীয় সদর রেঞ্চ কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন জানালেন, বান্দরবান-চট্টগ্রাম প্রধান সড়কসহ অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর দুই পাশে চলতি বছরে নতুন করে গাছ লাগানো পরিকল্পনা এখন নেই বন বিভাগের।
ফুলের শহর বান্দরবানের সৌন্দর্য ধরে রাখতে এ ব্যাপারে আশু পদক্ষেপ নেওয়া দরকার বলে জানিয়েছেন পর্যটকসহ স্থানীয়রা।