দ্বৈত শাসনের ফলে বিচারকার্যে বিঘ্ন ঘটে : প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, ‘বিচার বিভাগে দ্বৈত শাসনের ফলে বহু জেলায় শূন্য পদে সময় মতো বিচারক নিয়োগ প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে বিচারকার্যে বিঘ্ন ঘটে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এতেবিচারপ্রার্থী জনগণের ভোগান্তি বেড়ে যায়। তাই ১৯৭২ সালের সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদটি পুনঃপ্রবর্তন করা এখন সময়ের দাবি।’
আজ সোমববার বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের ৯ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক বাণীতে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অধঃস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের ওপর আপিল বিভাগের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা আছে। ১১৬ অনুচ্ছেদের ফলে অধঃস্তন আদালতের বিচারকদের পদোন্নতি, বদলি এবং শৃঙ্খলামূলক কার্যক্রম সুপ্রিম কোর্টের ওপর এককভাবে গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না।’
১ নভেম্বর বিচারবিভাগের পৃথকীকরণের বর্ষপূর্তি দিবস। ২০০৭ সালের পহেলা নভেম্বর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মাসদার হোসেন মামলা দায়ের আলোকে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচারবিভাগ পৃথক করা হয়।
প্রধান বিচারপতি বাণীতে বলেন, ‘উল্লেখিত প্রেক্ষাপটে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে প্রণীত ১৯৭২ সালের সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদটি পুনঃপ্রবর্তন হওয়া সময়ের দাবি। ওই বিধানটি পুনঃপ্রবর্তন করলে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আরো সমুন্বত ও সংহত হবে এবং বিচার বিভাগের সার্বিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ হবে।’
প্রধান বিচারপতি বলেন,’দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মাধ্যমে লক্ষ শহীদের রক্ত ও মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে আমরা বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন সার্বভৌম ভূ-খণ্ড পেয়েছি।’
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমাদের মূল সংবিধানে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের বিষয়টি স্পষ্ট থাকলেও প্রকৃতপক্ষে অতীতে আন্তরিকতার উদ্যোগী হয়নি। বহু চড়াই উৎরাই পেরিয়ে ২০০৭ সালে ১ নভেম্বর নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক করা হয়। কিন্তু তীব্র অবকাঠামো সমস্যা ও নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ম্যাজিস্ট্রেটরা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন এবং জনগণের আস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমার বিশ্বাস বাংলাদেশের বিচার বিভাগ একদিন এশিয়ার রোল মডেলে পরিণত হবে।’