এবার ট্রাকে নারী ধর্ষণ!
কোমল পানীয়ের সাথে নেশা জাতীয় বস্তু খাইয়ে এবার ট্রাকে এক নারীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার রাতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরে এ ঘটনা ঘটে বলে ওই নারী জানিয়েছেন।
আজ রোববার সকালে ওই নারীকে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। একই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন তাঁর স্বামীও। তাঁরা গাজীপুরের চৌরাস্তার পাশে তিলাপাড়ায় ভাড়া বাসায় থেকে তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। তাদের গ্রামের বাড়ি জামালপুর জেলার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায়।
জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার রেজাউল হাসান রেজা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ঘটনা সম্পর্কে শুনেছি। তবে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটনের জন্য তদন্ত করা হচ্ছে।’
গত বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় বাসের জন্য দাঁড়িয়ে থাকা ২১ বছর বয়সী এক গারো নারীকে পাঁচ যুবক জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে গণধর্ষণ করে। পরে মধ্যরাতে তাঁকে রাস্তায় ফেলে দেয় ধর্ষকরা। এরই মধ্যে গাজীপুরে নারী ধর্ষণের এ অভিযোগ আসল।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নারী জানান, ঢাকার খিলগাঁও এলাকায় চিকিৎসক দেখিয়ে শনিবার রাতে তিনি গাজীপুরের বাসায় ফেরার জন্য স্বামীকে নিয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন। কিন্তু বাসে উঠতে না পেরে রাস্তার পাশেই দীর্ঘক্ষণ বসেছিলেন। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে এক ট্রাকচালক গাড়ি নিয়ে তাদের সামনে দাঁড়ায় এবং গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব দেয়।
উপায় না দেখে স্বামী-স্ত্রী ওই ট্রাকে উঠে চালকের পাশেই বসেন। পরে গরমের মধ্যে পথে ট্রাকচালক তাদের কোমল পানীয় ‘ফানটা’ এনে খাওয়ায়। এর কিছু সময় পরই তাদের মধ্যে ঘুম ঘুম (নেশা অবস্থা) ভাব দেখা দেয়।
এ সময় ওই নারীর স্বামী চালকের পেছনে সিটে ঘুমিয়ে পড়েন। পরে ট্রাকচালক গাড়ি থামিয়ে অস্ত্রের মুখে মারধর করে ও গলায় কাপড় পেঁচিয়ে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করেন ওই নারী। তিনি আরো জানান, এ সময় তাঁদের মোবাইল ফোন ও টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়। পরে ট্রাকচালক চৌরাস্তার পাশে স্বামী-স্ত্রীকে ফেলে রেখে যায়।
হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আব্দুস সালাম সরকার জানান, রোববার দুপুর পর্যন্ত ওই দম্পতির মধ্যে নেশার ভাব লক্ষ করা গেছে। তারা একেকবার একেক কথা বলছেন। তাঁদের কথার মধ্যে অসংলগ্নতা দেখা গেছে। ওই নারী নিজে ধর্ষণের কথা জানিয়েছেন। তাঁর শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে।
তবে ধর্ষণের ঘটনা নিশ্চিত হওয়ার জন্য যৌন নির্যাতনের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। পরীক্ষার পর প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। এর আগে ধর্ষণের ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করা যাচ্ছে না বলেও জানান চিকিৎসক।
ওই নারীর স্বামীর পকেট থেকে ২০০৭ সালে ঢাকা সিটি করপোরেশনের ইস্যু করা একটি ভ্যানচালকের নিবন্ধন ও একই নামে ঢাকার মিরপুর ১৪ নম্বর সেকশনের ‘ভিশন অ্যাপারেলস প্রাইভেট লিমিটেড’ নামের একটি পোশাক কারখানায় আয়রন ম্যানের পরিচয়পত্র পাওয়া গেছে।
তাঁদের ১১ বছরের একটি কন্যা ও আট বছরের একটি ছেলে রয়েছে।