লক্ষ্মীপুরে যুবলীগনেতা হত্যায় পাঁচ জনের মৃত্যুদণ্ড, যাবজ্জীবন ১৪
লক্ষ্মীপুর সদরের চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি মামুনুর রশীদের হত্যা মামলায় পাঁচ জনের মৃত্যুদণ্ড ও ১৪ জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রাপ্তদের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় মো. সোহেল ও গোলাম রাব্বী নামে দুজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার (২৬ জুলাই) দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহিন এ রায় দেন।
জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘রায়ের সময় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মধু ও যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত টিপন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
ভুক্তভোগি মামুনুর রশিদ সদরের চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি চন্দ্রগঞ্জের আমানি লক্ষ্মীপুর গ্রামের আবু তৈয়ব খানের ছেলে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—মো. মধু, মো. মামুন, বাবু ওরফে গলাকাটা বাবু, মো. শামীম, কাউছার ওরফে ছোট কাউছার।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন—জাহাঙ্গীর আলম, নেহাল, মো. বোরহান, মো. তুহিন, জাকির হোসেন, সোহরাব হোসেন, বাছির আহাম্মদ, মো. মিজান, আলমগীর হোসেন, কছির আহম্মেদ, কামরুল ইসলাম, আনোয়ার হোসেন, তারেক আজিজ সুজন, মো. টিপন ওরফে জাহাঙ্গীর আলম। খালাসপ্রাপ্তরা হলেন—মো. সোহেল ও গোলাম রাব্বি।
মামলার এজাহার ও আদালত সূত্র জানায়, রাজনীতি ও সমাজসেবামূলক কাজে জড়িত থাকায় তখনকার কুখ্যাত সন্ত্রাসী সোলায়মান উদ্দিন জিসানের সঙ্গে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এতে জিসান বাহিনীর সদস্যরা মামুনকে হত্যার জন্য হুমকি দিত। পরে জিসান র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। এতে জিসানের ছোটভাই তুহিন সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান হয়ে এলাকায় অরাজকতা সৃষ্টি করে আসছিলেন। আর এ সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজনকে গ্রেপ্তারে পুলিশকে সহযোগিতা করে মামুন।
এদিকে সন্ত্রাসী জিসান হত্যার ঘটনায় মামুন ও ওমর ফারুক নামে আরও এক ব্যক্তিকে দায়ী করে তুহিন। এ কারণে তুহিন সন্ত্রাসী বাহিনীর সক্রিয়দের নিয়ে মামুন ও ফারুককে হত্যার পরিকল্পনা করে। ২০১৫ সালের ১৮মে রাতে মোটরসাইকেলযোগে মামুন চাটখিলের দেলিয়ার বাজার থেকে বাড়ির দিকে আসছিলেন। পথে আসামিরা চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের পূর্ব আমানি লক্ষ্মীপুর গ্রামে তাকে গুলি করে হত্যা করে। পরদিন মামুনের ভাই ফখরুল ইসলাম বাদী হয়ে ১০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৪ থেকে ১৫ জনকে আসামি করে চন্দ্রগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। ২০১৬ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) গোলাম হাক্কানি আদালতে ২১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ড, ১৪ জনের যাবজ্জীবন ও দুজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।