ব্যবসা করা অপরাধ হলে আমি সেই অপরাধে অপরাধী : বাণিজ্যমন্ত্রী
জাতীয় সংসদে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, ব্যবসা করাটা যদি অপরাধ হয়ে থাকে তাহলে আমি সেই অপরাধে অপরাধী। হয়তো ব্যবসা না করলে এদিক-সেদিক থেকে চাঁদা নিয়ে আমাকে বাঁচতে হতো। আমি যে ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত, তা দেশের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। আমি বিদেশে রপ্তানি করি।
আজ বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদে বাণিজ্য সংগঠন (সংশোধন) বিল পাস নিয়ে আলোচনার বক্তব্যে টিপু মুনশি এ কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘এখানে জিনিসপত্রের দাম ও সিন্ডিকেট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বলা হয়েছে, আমি নিজে একজন সিন্ডিকেটের লিডার। আমি ব্যবসায়ী। দুর্ভাগ্য হচ্ছে, এই সংসদে আমার অনেকবার বলতে হয়েছে যে, আমি ব্যবসায়ী হওয়ার অনেক আগে থেকেই রাজনীতি করি। আমি রাজনীতি শুরু করার ২০ বছর পরে ব্যবসা শুরু করেছি।’
বৈশ্বিক কারণে দাম বৃদ্ধি এবং কয়েকটি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে উৎপাদিত দ্রব্যের মূল্য কখনও কখনও বাড়ে। স্বীকার করতে দ্বিধা নেই, হঠাৎ করে ব্যবসায়ীরা সুযোগ নেয়। ডিমের কথা যদি বলি, এটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তৈরিও করে না, এর সঙ্গে সম্পৃক্তও না। এটি প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত। দেশের হাজার হাজার মানুষ মুরগি পালন করে, সেই মুরগি ডিম দেয়। পারিবারিকভাবে ছোট আকারে মুরগি পালন হয়। আবার কিছু বড় ব্যবসায়ীও আছে। এই লাখ লাখ ডিম উৎপাদনকারীকে আমরা কন্ট্রোল করব কীভাবে? মুক্তবাজার অর্থনীতি হচ্ছে বাস্তবতা।’
টিপু মুনশি বলেন, ‘আজকে আমরা কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসে পেঁয়াজ ও আলুর দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি। সেটা আমরা কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করব। আমরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করছি। তবে এটাও ঠিক অনেকে সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে। প্রধানমন্ত্রী সবকিছুর খোঁজখবর নিচ্ছেন। কৃচ্ছ্রতা সাধনের কথাও বলছেন। আমরা সংসদ সদস্যদেরও এ বিষয়ে সহযোগিতা চাই। আপনারা মানুষের কষ্ট বোঝেন বলেই কথাগুলো বলছেন। তবে, বৈশ্বিক ও দেশের সার্বিক অবস্থাটা বিবেচনা করে আপনাদের সহযোগিতা পেলে আমরা এগুলো থেকে বেরিয়ে আসতে পারব। আমরা চেষ্টা করছি।’
বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আজ ডিমের একটি দাম নির্ধারণ করে দিয়েছি। যদি সেই দামে না পাই, তাহলে দু-এক দিনের মধ্যে ডিম আমদানি করব। আমরা ভোক্তাদের দিকে লক্ষ্য রাখব। আমাদের চেষ্টার ত্রুটি নেই।’
পরে বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে প্রেরণ ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি শেষে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। নির্ধারিত সময়ে বাণিজ্য সংগঠনের নির্বাচন যথাসময়ে করা না গেলে অতিরিক্ত ছয় মাস সময় পাওয়া যায়। বিলে সংশোধনী এনে এখন সেটি আরও ছয় মাস বাড়ানো হয়েছে।