মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষে কৃষকের মুখে হাসি
মালচিং পদ্ধতিতে মাচায় চাষ করা তরমুজে ভরে গেছে ক্ষেত। ভালো ফলনে হাসি ফুটেছে কৃষকের মুখে। এতে তরমুজ চাষে সফলতা পেয়েছেন পাবনা সদর উপজেলার রাজাপুরের কৃষক সুলতান প্রামানিক।
চলতি বছরে কৃষক সুলতান রাজাপুরে ২৫ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষ করেন। তাঁর ক্ষেতের মাচায় ঝুলছে শত শত তরমুজ। রবি হাইব্রিড জাতের এসব তরমুজ এখন বাজারজাতের সময় হয়েছে। একই সঙ্গে বেশি লাভের আশা করছেন তিনি। আর ফলনকে বিষমুক্ত রাখতে ব্যবহার করা হয়েছে মালচিং পদ্ধতি ও ফেরোমন ফাঁদ।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দোগাছি ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে সুলতান নামের এক কৃষক ২৫ শতাংশ জমিতে তরমুজ চাষ করেছেন। তিনি তরমুজ চাষে মালচিং পদ্ধতিতে ব্যবহার করেছেন। এটি মূলত চীন ও জাপানের বিষমুক্ত সবজি চাষের একটি পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি। আবহাওয়া ও মাটির উর্বরতার কারণে হলুদ, ও সবুজ রঙের তরমুজ হলেও এখানে কালো জাতের তরমুজও চাষ করছে কৃষকরা।
কৃষক সুলতান প্রামানিক বলেন, ‘উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে মালচিং পদ্ধতিতে ২৫ শতাংশ জমিতে ছয়টি ট্রেতে বীজ বপন করি। এতে ৪০০টি তরমুজের চারা পরিপূর্ণভাবে বেড়ে ওঠে। এরপর নানা পরিচর্যায় গাছগুলোতে ফুল আসতে শুরু করে। আমার খরচ হয়েছে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। মালচিং পদ্ধতিতে চাষ করা তরমুজ ৬৫ দিনের মধ্যে বিক্রির উপযোগী হয়। তরমুজের ওজন দুই থেকে তিন কেজি হবে। স্থানীয় বাজারে বারোমাসি তরমুজের ব্যাপক চাহিদা থাকায় প্রতি কেজি তরমুজ ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হবে। এতে ধান ও সবজি চাষের প্রায় দ্বিগুণ লাভ হতে পারে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাহানা পারভীন লাবনী বলেন, ‘স্থানীয় কৃষকদের উচ্চমূল্যের ফসল হিসেবে গ্রীষ্মকালীন তরমুজ চাষে উদ্বুদ্ধ করা হয়। রাজাপুরে চাষিরা ফেরোমন ফাঁদ ও মালচিং পদ্ধতিতে তরমুজ চাষ করায় ফলন হবে বিষমুক্ত। আশা করছি মালচিং পদ্ধতিতে মাচায় তরমুজ চাষ এ এলাকায় আরও সম্প্রসারিত হবে।’
কৃষি কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আধুনিক প্রযুক্তি সম্প্রসারণের মাধ্যমে রাজশাহী বিভাগের কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় রাজাপুরের কৃষক মো. সুলতান প্রামানিককে বিনামূল্যে সার ও বীজসহ সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হয়েছে। কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। মালচিং পদ্ধতিতে প্রতি হেক্টরে ৩০ থেকে ৩৫ টন তরমুজ উৎপাদন হবে। তরমুজ চাষের এ প্রযুক্তি আগামীতে আরো সম্প্রসারিত হবে বলে প্রত্যাশা করছি।’