সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবনমন : টিআই
বিশ্বের সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থানের অবনতি হয়েছে। এবার বাংলাদেশের অবস্থান দশম, যা গতবার ছিল ১২তম। গত এক যুগের মধ্যে বাংলাদেশে দুর্নীতি এবার সবচেয়ে বেশি। বিশ্বের ১৮০টি দেশের মধ্যে ‘সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের এই অবস্থানের কথা জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআই)।
ধানমণ্ডির মাইডাস সেন্টারে আজ মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) সকালে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি জানান।
দুর্নীতিতে শীর্ষস্থানে রয়েছে আফ্রিকার দেশ সোমালিয়া। এ তালিকায় যৌথভাবে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে দক্ষিণ সুদান ও সিরিয়া। আর তৃতীয় ভেনিজুয়েলা। তাদের স্কোর যথাক্রমে ১৩ ও ১৪। সবচেয়ে কম দুর্নীতিমুক্ত দেশের তালিকায় শীর্ষে ডেনমার্ক।
সিপিআই সূচকে দুর্নীতির ধারণার মাত্রাকে ০ থেকে ১০০-এর স্কেলে নির্ধারণ করা হয়। ‘০’ স্কোরকে দুর্নীতির কারণে সর্বোচ্চ ক্ষতিগ্রস্ত এবং ‘১০০’ স্কোরকে দুর্নীতির কারণে সবচেয়ে কম ক্ষতিগ্রস্ত বা সর্বাধিক সুশাসিত বলে ধারণা করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের স্কোর ১ পয়েন্ট অবনমন হয়ে ২৪ হয়েছে। সমান স্কোর নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে একই অবস্থানে রয়েছে আফ্রিকান রিপাবলিক, ইরান, লেবানন ও জিম্বাবুয়ে।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, সিপিআই (দুর্নীতির ধারণা সূচক) অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান হতাশাজনক। সিপিআই ২০২৩ অনুযায়ী, এ বছর বাংলাদেশের স্কোর ২০২২ এর তুলনায় এক পয়েন্ট কমে ২৪। নিম্নক্রম অনুযায়ী অবস্থানের দুই ধাপ। অবনতি হয়ে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১০ম এবং ঊর্ধ্বক্রম অনুযায়ী ১৪৯তম।
ড. ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, সূচকের বিশ্লেষণ করলে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের স্কোর ও অবস্থান গত এক যুগের মধ্যে সর্বনিম্ন। স্কোর ও অবস্থানের এই অবনমন প্রমাণ করে যে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের বিভিন্ন অঙ্গীকার ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহনশীলতার’ ঘোষণা বাস্তবিক অর্থে কার্যকর প্রয়োগ হয়নি। বরং আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও কাঠামোগত দুর্বলতায় বাংলাদেশের অবস্থানের আরও অবনতি হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশের মধ্যে এবারও বাংলাদেশের অবস্থান ও স্কোর যথারীতি আফগানিস্তানের পর। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কাসহ অন্য দেশগুলোর তুলনায় বাংলাদেশে দুর্নীতির হার বেশি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন টিআইবির চেয়ারপারসন সুলতানা কামাল, টিআইবির উপদেষ্টা (নির্বাহী ব্যবস্থাপনা) অধ্যাপক সুমাইয়া খায়ের, পরিচালক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) শেখ মনজুর-ই-আলম, সমন্বয়ক (আউটরিচ অ্যান্ড কমিউনিকেশন) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম প্রমুখ।