কিশোরগঞ্জে বহিষ্কৃত বিএনপিনেতা নাজমুল একাই নির্বাচনি মাঠে
কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সদ্য বহিষ্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক ও সদর উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল আলম নির্বাচনি মাঠে থাকলেও তার পাশে পুরোনো সহকর্মীরা কেউ নেই। আত্মীয়-স্বজন এবং দলীয় কোনো পদে নেই এ ধরনের কিছু সমর্থকদের নিয়েই তিনি গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। শুরুতে অনেকেই তার সঙ্গে মাঠে থাকলেও বহিষ্কারসহ দলের কঠোর অবস্থানের কারণে এখন সাংগঠনিকভাবে পরিচিত তেমন কাউকে পাশে দেখা যাচ্ছে না।
দলীয় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রথম দফায় অনুষ্ঠিতব্য কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় নাজমুল আলমকে ২৫ এপ্রিল কারণ দর্শানোর নোটিশ এবং ২৭ এপ্রিল দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয় দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত দুটি বিবৃতিতে। এতে নির্বাচনে অংশ নেওয়াকে দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থী এবং দলের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম জানান, বহিষ্কারের পত্রটি নাজমুল আলমের হাতে সঙ্গে সঙ্গে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মৌখিকভাবে ও ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে জানানো হয়েছে।
জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসাধারণ সম্পাদক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে দলীয় নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নাজমুল আলমের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা মোটেই উচিত হয়নি। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় বিএনপি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটাই চূড়ান্ত।
দলের এ সিদ্ধান্তের পরপরই গতকাল কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি কার্যালয়ে দিনব্যাপী প্রতিনিধি সভা করেন দলটির কেন্দ্রিয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। পরে বিকেলে তিনি নেতাদের নিয়ে নির্বাচন বর্জনের আহ্বান জানিয়ে লিফলেট বিতরণ করেন।
জেলা বিএনপির সদ্য বহিস্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক মো. নাজমুল আলম একই সঙ্গে সদর উপজেলা বিএনপির প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক। আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নাজমুল আলম আনারস প্রতীকে নির্বাচন করছেন। ছাত্রজীবন থেকে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নাজমুল আলম। এর আগে জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
এ বিষয়ে নাজমুল আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, দীর্ঘ ৪০ বছরের রাজনৈতিক জীবনে আমি তৃণমূল জনগণের সুখ-দুঃখে পাশে থেকেছি। সেই মানুষদের জন্যই কিছু করার ইচ্ছা নিয়ে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। এ ছাড়া নির্বাচনে অংশ নিতে জনগণের চাপ ও ইচ্ছার প্রতিও সম্মান জানিয়েছি। গতবারও আমি চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছিলাম। কিন্তু দলের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রত্যাহার করেছিলাম। এর আগে ভাইস চেয়ারম্যান পদে একবার আমি বিজয়ী হলেও কারচুপি করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার ওপর এবার দলীয় প্রতিকবিহীন নির্বাচন।
বিএনপির দলীয় অবস্থান ও কারণ দর্শানো নোটিশ প্রসঙ্গে নাজমুল আলম বলেন, দলের সিদ্ধান্তের সঙ্গে আমার দ্বিমত নেই। তবে আশা কেন্দ্রীয় বিএনপি কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার কয়েক লাখ মানুষের চাওয়া-পাওয়া এবং তাদের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততাকে আমলে নিয়ে বিবেচেনা করবেন। আশা করি কেন্দ্রিয় নেতৃত্ব তাদের সিদ্ধান্ত পুর্বিবেচনা করবে। তারপরেও দল আমাকে নিয়ে যে সিদ্ধান্ত নেবে আমি মেনে নিব। আমি বিএনপিতে ছিলাম, আছি এবং ভবিষ্যতেও থাকব।