শান্তি প্রতিষ্ঠায় গৌতম বুদ্ধ আজীবন সাম্যের বাণী প্রচার করেছেন : রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, “একটি সৌহার্দ্য ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মহামতি গৌতম বুদ্ধ আজীবন সাম্য ও মৈত্রীর বাণী প্রচার করে গেছেন। সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ‘অহিংস পরম ধর্ম’ বুদ্ধের এই অমিয় বাণী আজও সমভাবে প্রযোজ্য।”
আজ বুধবার (২২ মে) বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে গতকাল দেওয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপ্রধান এসব কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আজকের এই অশান্ত ও অসহিষ্ণু বিশ্বে মূল্যবোধের অবক্ষয় রোধ, যুদ্ধ-বিগ্রহ, ধর্ম-বর্ণ-জাতিগত হানাহানি রোধসহ সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠায় মহামতি বুদ্ধের দর্শন ও জীবনাদর্শ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে আমি মনে করি।’
বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মৈত্রীময় শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, ‘বুদ্ধ পূর্ণিমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব। মহামতি গৌতম বুদ্ধের শুভ জন্ম, বোধিজ্ঞান লাভ ও মহাপরিনির্বাণ এ উৎসবের সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত।’
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, “মহামতি বুদ্ধ পৃথিবীকে সুখী ও শান্তিপূর্ণ করে গড়ে তোলার জন্য নিরন্তর প্রয়াস চালিয়েছেন। তিনি মানবজীবনে দুঃখ ও দুঃখের কারণ এবং নিরোধের উপায় সম্বন্ধে অন্তর্দৃষ্টি লাভ করেন, যা ‘চতুরার্য সত্য’ নামে পরিচিত। চতুরার্য সত্য তত্ত্বে তিনি জীবনে দুঃখ, দুঃখের উৎপত্তি, দুঃখ ভোগের কারণ এবং তা থেকে মুক্তির পথ দেখান। তার মতে ‘নির্বাণ’ লাভের মাধ্যমে মানুষ জীবনের পরমার্থ অর্জন ও দুঃখ থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারে। এজন্য তিনি আর্য অষ্টমার্গ তথা প্রজ্ঞা, শীল ও সমাধি চর্চার উপদেশ দেন। তিনি স্থান-কাল-পাত্রের ঊর্ধ্বে উঠে পৃথিবীর সব জীবের কল্যাণ ও সুখ কামনা করেন।”
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমানকাল থেকে এদেশে সকল ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম ও আচার-অনুষ্ঠানাদি অত্যন্ত উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে পালন করে আসছে, যা আমাদের সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যের চর্চা ও বুদ্ধের মহান আদর্শকে ধারণ করে বৌদ্ধ সম্প্রদায় দেশের উন্নয়নে তাদের কর্মপ্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন এ প্রত্যাশা করি।’
রাষ্ট্রপ্রধান আরও বলেন, “‘সব্বে সত্তা সুখীতা হোন্তু’—জগতের সব প্রাণী সুখী হোক, গৌতম বুদ্ধের শাশ্বত এ দর্শন সমাজে শান্তির প্রতিফলন ঘটাবে এই কামনা করি।”