জুবায়ের হত্যা মামলায় বন্ধু রাজিনের স্বীকারোক্তি
শ্রেণিকক্ষে দ্বন্দ্বের জেরে ঢাকা কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী জুবায়ের হাসান রাফিতকে খুনের মামলায় তার বন্ধু রাজিন ইকবাল চৌধুরী আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছে। গতকাল সোমবার (৮ জুলাই) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আসামি রাজিনকে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহ আলী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আমিনুল ইসলাম। এ সময় রাজিনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
এর আগে গত রোববার (৭ জুলাই) হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর এলাকা থেকে অভিযুক্ত রাজিনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
নথি থেকে জানা গেছে, জুবায়ের হাসান রাফিত ঢাকা কমার্স কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিল। সে ক্লাস ক্যাপ্টেন হিসেবে দায়িত্ব পালন করত। গত জুন মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে রাজিনের কাছে কলেজের শিক্ষক একটি দাবা বোর্ড পান। পরে সেটি বাজেয়াপ্ত করা হয়। দাবা বোর্ডটি ফিরে পেতে কলেজের উপদেষ্টা বরাবর আবেদন করে রাজিন। কিন্তু, আবেদনে নিয়মিত শিক্ষার্থী উল্লেখ করাকে কেন্দ্র করে জুবায়ের ও রাজিনের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে ধস্তাধস্তি হয়। পরে কলেজ শিক্ষকদের মধ্যস্থতায় বিষয়টির মীমাংসা এবং অভিভাবকদের অবহিত ও সতর্ক করা হয়। এ ঘটনার জেরে রাজিনের মনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। রাজিন জুবায়েরকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে।
রাজিনের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে আদালতের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী, গত শনিবার দুপুরে জুবায়েরকে কমার্স কলেজের পার্শ্ববর্তী নিজ ভাড়া বাসায় কৌশলে ডাকে রাজিন এবং তার ডাকে সাড়া দেয় জুবায়ের। জুবায়ের বিকেলে সেখানে পৌঁছালে তাদের মধ্যে পুনরায় বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে রাজিন জুবায়েরকে ধারালো বটি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। হত্যার বিষয়টি রাজিন তার বাবাকে জানালে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছেন এবং স্থানীয় লোকজন বিষয়টি জানার আগেই রাজিনকে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন। পরে মরদেহটি সম্পর্কে স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ অবগত হলে রাজিনের বাবাও কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গিয়ে উভয়েই নির্দিষ্ট একটি স্থানে মিলিত হন। রাজিনের বাবা মাইক্রোবাসে করে ছেলেকে নিয়ে হবিগঞ্জে পালিয়ে যান। সেখানে নিকটাত্মীয়ের বাড়িতে ছেলেকে রেখে অন্যত্র আত্মগোপনে চলে যান বাবা।