নির্বাচনের জন্য অধিক সময়ের প্রয়োজন হয় না : নজরুল ইসলাম খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, আমরা যেসব প্রস্তাব করেছি সে অনুযায়ী দ্রুত নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব। এখানে এমন কোনো প্রস্তাব করা হয় নাই যেটা নতুন করে কোনো কিছু করতে হবে। আমরা নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী করার কথা বলেছি, নির্বাচনের সচিবালয় করা এবং তাদের কিছু ক্ষমতা দেওয়া ইত্যাদি, আমরা প্রচলিত আইনগুলোর সংশোধন, সংস্কার… এগুলোর জন্য অধিক সময়ের প্রয়োজন হয় না।
আজ সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন দলের নির্বাচন সংস্কার বিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান। আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ। উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ইসমাইল জবিহউল্লাহ।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘একটা নির্বাচনের বেসিক কাজ ভোটার তালিকা প্রণয়ন… সেই ভোটার তালিকা প্রণয়নে বাড়ি বাড়ি যাওয়া…। আমরা এটা বুঝি নাই কি এক্সসারসাইজ হবে। ব্যাপারটা হচ্ছে যে, তালিকা ঘোষণার সময়ে এটাও ঘোষণা করা হয় যে, কারো নাম যুক্ত না হলে তাহলে তারা স্থানীয় নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে গিয়ে নাম অন্তর্ভুক্ত করবেন, কারো অভিযোগ থাকে যে, বেঁচে নাই, বিভিন্ন কারণে ভোটার হওয়া যায় না এরকম কারো নাম তালিকায় থাকলে তা কার্যালয়ে গিয়ে জানালেই তো ভোটার তালিকা হয়ে গেল… এরপর নির্বাচনি প্রস্তুতি… সিডিউল ঘোষণা করা, রুল অনুযায়ী প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করবে।’
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এসব কিছু করতে এতো বেশি সময় লাগার কথা না। আমরা যেসব প্রস্তাব দিয়েছি সেগুলো মেনে নির্বাচন অনুষ্ঠানে খুব বেশি বিলম্ব হওয়ার প্রয়োজন হয় না। আমরা প্রস্তাব যেটা করেছি, সেটা হলো যাদের নেতৃত্বে যেসব অপকর্ম হয়েছে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তারা বিতাড়িত হয়েছে পলায়ন করেছে। যাদের মাধ্যমে অপকর্ম করা হয়েছে তাদের ব্যাপারে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি যাতে তারা আগামীতে নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় না থাকে, সেই প্রস্তাব আমরা করেছি। কাজেই আমরা বিশ্বাস করি, অন্তবর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় থাকছে তার নির্বাচনি কোনো স্ট্যাক নাই, নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে। আর যারা নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় যুক্ত থাকবে তাদের মধ্যে যারা এই ধরনের অপকর্মের সাথে আগে যুক্ত ছিল বা থাকতে পারে তাদের ব্যাপারে কার্যকর ব্যবস্থা নিয়ে এমন লোকদেরকে নিযুক্ত করা যারা এই ধরনের অপকর্মে যুক্ত হবেন না সেটা আমরা বলেছি।’
সংবাদ সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা যেসব সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছি দলের পক্ষ থেকে সুচিন্তিত ভাবে, এক্সপার্ট কমিটির সাথে বসেছি… অনেকের সাথে কথা বলেছি….। আমরা যেসব সংস্কারের কথা বলেছি সেগুলো অধিকাংশ আইনি সংস্কারের বিষয়, কাগজের বিষয়… প্রাকটিক্যালি যে কাজগুলোর জন্য নির্বাচন কমিশন সময় নেয় যেমন ভোটার তালিকা প্রণয়ন…নতুন ভোটার সংযোজন… কি কি ভুল-ভ্রান্তি আছে, ভুয়া ভোটার স্ক্রুটনি করা তারপরে নির্বাচন কাজে অফিসার নিয়োগ, ডিলিমিটেশন ইত্যাদি সব কাজ গুছাতে প্রাকটিক্যালি ২-৩ মাসের বেশি সময় লাগার কথা না।’
সালাহ উদ্দিন আহমেদ তিনি বলেন, ‘সরকারের আরও সংস্কার, প্রশাসনিক সংস্কার, জুডিশিয়াল সংস্কার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সংস্কার আছে এগুলো সব সম্পন্ন করে নির্বাচন উপহার দিতে আমাদের মনে হয় না খুব বেশি হলে ৩-৪ মাসের বেশি সময় লাগবে। সব রিকমন্ডেশন ফাইনাল হওয়ার পরে আপনারা ধারণা পাবেন প্রাকটিক্যালি আমাদের কয়দিন সময় লাগবে একটা ইনক্লুসিভ ইলেকশন অনুষ্ঠানের জন্য।’
এক প্রশ্নের জবাবে সালাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘কেয়ারটেকার সরকার আছে বা হবে … এটাই ছিলো সবচাইতে বড় বাধা একটা ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন না হওয়ার। ডিলিমিটেশন, অপকর্মে জড়িতদের নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে বাদ রাখা এসব হচ্ছে উপসর্গ। আসল রোগ হচ্ছে, কেয়ারটেকার সরকার না থাকাটা। কেয়ারটেকার সরকার পূনর্বহাল হলে এই সমস্ত উপসর্গ আর থাকবে না। কেয়ারকেটাকার সরকার হলে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে বাধ্য।’