লাখপতির গল্প
মেয়েদের জন্য আরও কিছু করতে চাই : তনু
বগুড়ার তাহমিনা আক্তার তনু মূলত কাজ করেন হাতের কাজের থ্রি-পিস, শাড়ি, মসলিন শাড়ি, সিল্ক শাড়ি ও ব্লক প্রিন্ট শাড়ি নিয়ে। অনলাইনে এসব পণ্য বিক্রি করেই এখন মাসে বেশ ভালো আয় করেন তিনি। বনে গেছেন লাখপতি।
সম্প্রতি এনটিভি অনলাইনের সঙ্গে কথা হয় তাহমিনা আক্তার তনুর সঙ্গে। জানান তাঁর উদ্যোক্তা-জীবনের গল্প। সামনেই পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদের পোশাক নিয়ে এখন ব্যস্ততা তাঁর।
তনু বলেন, ‘আমার প্রতিষ্ঠানের নাম লাবণ্য। মূলত আমার তিনটা প্রতিষ্ঠান—পার্লার বুটিকস অ্যান্ড জিম। এই তিনটা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে লাবণ্য নামটা আমি যথাযথ মনে করেছি। আমার মেয়ের নাম লাবণ্য। কাজ করছি মূলত বগুড়া জেলা থেকে। ২০১২ সাল থেকে আমি আমার বিজনেস শুরু করি। প্রথমে খুব অল্প পরিসরে শুরু করলেও আল্লাহর রহমতে এখন অনেক ভালো সাড়া পাচ্ছি। নারী উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে আমি কাজ শুরু করি। বর্তমানে আমার মাধ্যমে কাজ করছে তিনশর অধিক নারী। সমাজে মেয়েদের জন্য আরও কিছু করতে চাই।’
উদ্যোক্তা হওয়ার পেছনে অনুপ্রেরণা কারা ছিল? তনু বলেন, ‘আলহামদুলিল্লাহ, নারী উদ্যোক্তা হতে পেরে নিজেকে নিয়ে অনেক গর্ব করি। আমার ছোটবেলা থেকে উদ্দেশ্য ছিল, আমি মানুষকে নিয়ে কাজ করব। আমার মাধ্যমে যদি দুজন মানুষও স্বাবলম্বী হতে পারে, এটাই হবে আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমি নিজেকে এগিয়ে নিচ্ছি। আমার কাজের সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা যে ছিল এবং যে আমাকে সব সময় সাপোর্ট করে গেছে এবং এখনও করছে, আমার পাশে সব সময় আছে, সে হলো আমার হাজব্যান্ড।’
উইমেন অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম বা উই-এর ফেসবুক গ্রুপ তনুর উদ্যোক্তা-জীবনে বেশ প্রভাব ফেলেছে। তিনি জানান, উই থেকে তাঁর পাঁচ লাখ টাকার বেশি বিক্রি হয়েছে।
উই-এর প্রশংসা করে তনু বলেন, ‘আমরা যারা মূলত অফলাইনে বিজনেস করি, তাদের জন্য করোনাকালের শুরুটা ছিল খুবই ভয়ংকর। এ সময় এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেয়েছি আমি উই-এর মাধ্যমে। বলতে গেলে আমার বিজনেসটা সচল ছিল উই-এর কারণেই। উই হাজারও নারী উদ্যোক্তার স্বপ্ন পূরণের বিশ্বাসযোগ্য প্ল্যাটফর্ম।’
উদ্যোক্তা হওয়ার পরে মধুর স্মৃতি বর্ণনা করে তনু বলেন, ‘আমার ভালো লাগাগুলো হচ্ছে মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। কিছু দিন আগে আমি কর্মীদের কাছে গিয়েছিলাম, সবাই আমাকে বলেছে—আপনাকে প্রাণ খুলে দোয়া করি, আপনি আরও বড় হন। এই কথাটা আমার জন্য অনেক সুখের মুহূর্ত ছিল। আমি কতটা সফল হতে পেরেছি, জানি না; তবে আমার পেছনে যাঁদের অবদান ছিল, তাঁরা হলেন আমার হাজব্যান্ড ও মা।’
তনুর উদ্যোক্তা-জীবন নয় বছর। তাঁর প্রতিষ্ঠান ‘লাবণ্য’ নিয়ে আরও বহু পথ পাড়ি দিতে চান। নারীর কল্যাণে আজীবন কাজ করে যেতে চান।