বিশ্বব্যাংকের দীর্ঘমেয়াদি ঋণ সুবিধার আওতায় আরো ছয় ব্যাংক
বিশ্বব্যাংকের ২৪০ কোটি টাকার দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়ন তহবিল ব্যবহারে তৃতীয় দফায় আরো ছয়টি ব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাংলাদেশ ব্যাংকের জাহাঙ্গীর আলম কনফারেন্স হলে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। গভর্নর সচিবালয়ের মহাব্যবস্থাপক এ এফ এম আসাদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষে ঋণ প্রকল্পটির পরিচালক ও ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক আহসান উল্লাহ এবং ব্যাংকগুলোর পক্ষে ব্যবস্থাপনা পরিচালকরা চুক্তিপত্রে সই দেন।
তৃতীয় দফায় চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হওয়া ব্যাংকগুলো হলো ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক ও স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।
আর্থিক খাতের সহায়তা প্রকল্পের আওতায় বিশ্বব্যাংকের এ তহবিল গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তহবিল থেকে চুক্তিবদ্ধ ব্যাংকগুলো ৫ থেকে ১০ বছর মেয়াদি বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ সহায়তা পাবে।
এ সুবিধা পেলে ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের বৈদেশিক মুদ্রায় দীর্ঘমেয়াদি ঋণচাহিদা পূরণ করতে পারবে। এতে বৈদেশিক ঋণ নেওয়া কমবে। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোও স্বল্প মেয়াদের বাণিজ্যিক ঋণ নেওয়ার পরিবর্তে দীর্ঘমেয়াদি ঋণের দিকে ঝুঁকবে।
বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তা তহবিল থেকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর সুশাসনের দিকে লক্ষ রাখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কেবল একটি নির্দিষ্ট মান অর্জনের পরই ব্যাংকগুলো এ তহবিলে অংশ নিতে পারবে। সুদের হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে এসব ব্যাংকের ক্যামেলস সূচক প্রযোজ্য হবে। অর্থাৎ পাঁচ বছর, সাত বছর ও ১০ বছর মেয়াদে এ ঋণের সুদহার হবে যথাক্রমে সর্বনিম্ন ২ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ৩ দশমিক ৫ শতাংশ।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নাজনীন সুলতানা বলেন, বেসরকারি খাত দেশে বিনিয়োগের প্রধান চালিকাশক্তি। ফলে এ খাতের উৎপাদনশীলতা বাড়ানো অত্যন্ত জরুরি। এ লক্ষ্যে বেসরকারি খাতে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ বাড়াতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। ব্যাংকগুলো এ তহবিল যথাযথ ব্যবহার করলে শিল্প খাতের উৎপাদন বাড়বে। পাশাপাশি রপ্তানি খাতের পূর্ণমাত্রার সম্প্রসারণ ঘটবে।
অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের কর্মকর্তা, বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত ১৯ নভেম্বর প্রথম দফায় চারটি ব্যাংক—যথাক্রমে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, ওয়ান ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক ও আল-অরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক এ তহবিল থেকে ঋণ সহায়তা পেতে চুক্তি করেছিল।
১ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় ছয়টি ব্যাংক—যথাক্রমে ইস্টার্ন ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, ব্যাংক এশিয়া, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ও এক্সিম ব্যাংক চুক্তি করে।