কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জরিমানার বিরুদ্ধে রিভিউর সুযোগ পেয়েছে ফারমার্স ব্যাংক
ঋণ নেওয়ার তথ্য গোপন করায় ফারমার্স ব্যাংককে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে এ আদেশের বিরুদ্ধে পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করা যাবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
আগামী ১৪ দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে ফারমার্স ব্যাংককে এই রিভিউ আবেদন করতে হবে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জরিমানার সিদ্ধান্তের স্থগিত আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের নিষ্পত্তি করে প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে চার সদস্যের বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন—বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ও বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আজমালুল হোসেন কিউসি ও অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
ফারমার্স ব্যাংকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট আবদুল বাসেত মজুমদার ও মওদুদ আহমদ। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন কামালুল আলম ও এ কে এম রাশেদুল হক।
আদেশের পর এ কে এম রাশেদুল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপিল বিভাগ আইনের বিধান অনুসারে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে আমাদের রিভিউ আবেদন গ্রহণ করতে বলেছে। আইন অনুযায়ী ১৪ দিনের মধ্যে রিভিউ আবেদন করা হবে।’
মামলার বিবরণে জানা যায়, আওয়ামী লীগ নেতা মহীউদ্দীন খান আলমগীরের মালিকানাধীন ফারমার্স বাংককে ওই জরিমানা দিতে হবে কি না, তা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জরিমানার আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের দেওয়া স্থগিতাদেশ রুলেরও নিষ্পত্তি হয়ে গেছে বলে আইনজীবীরা জানান।
২০১৩ সালের জুন মাসে লাইসেন্স পাওয়া ফারমার্স ব্যাংক ৩৮টি শাখা নিয়ে কার্যক্রম চালাচ্ছে। ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদে চেয়ারম্যান পদে রয়েছেন সরকারি হিসাব-সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মহীউদ্দীন খান আলমগীর।
পৌনে তিন বছরের কার্যক্রমে ফারমার্স ব্যাংকে প্রায় ৪০০ কোটি টাকার ঋণ অনিয়মের তথ্য পায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর পর সম্প্রতি ব্যাংকটির কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে একজন পর্যবেক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়।
ছয়টি প্রতিষ্ঠানের ঋণের তথ্য গোপন করায় চলতি বছর ৩ জানুয়ারি ফারমার্স ব্যাংককে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ১০ দিনের মধ্যে ওই অর্থ কেন্দ্রীয় ব্যাংককে পরিশোধ করতে বলা হয়।
এ জরিমানার বিরুদ্ধে ফারমার্স ব্যাংক কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালতে গেলে ১১ জানুয়ারি বিচারপতি তারিকুল হাকিম ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর হাইকোর্ট বেঞ্চ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জরিমানার আদেশ চার মাসের জন্য স্থগিত করেন। জরিমানার আদেশ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না—তা জানতে চেয়ে একটি রুলও জারি করেন আদালত।
এর পর রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টের স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে যায়। ২৫ জানুয়ারি চেম্বার বিচারপতি বিষয়টি শুনানির জন্য নিয়মিত আপিল বেঞ্চে পাঠান। আজ শুনানি শেষে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জরিমানার সিদ্ধান্তের স্থগিত আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের নিষ্পত্তি করা হয়।