সামাজিক অনুষ্ঠান করের আওতায় আনার প্রস্তাব
করের টাকা উন্নয়ন হচ্ছে দেশ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কর বাড়ানোর বিভিন্ন পরিকল্পনা করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সেই বাড়ানোর লক্ষ্যে এবারে সামাজিক অনুষ্ঠানে অতিথি আপ্যায়ন ক্ষেত্রে একশ জনের বেশি হলে জনপ্রতি ৫০ টাকা হারে অগ্রিম করের প্রস্তাব দিয়েছে ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ (আইসিএমএবি)।
এনবিআর কাছে দেওয়া গতকাল রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) বাজেট প্রস্তাবে এসব কথা বলেছে আইসিএমএবি। তারা বলেছে, সামাজিক অনুষ্ঠান বিয়ে, বৌভাত, জন্মদিন বা বিবাহবার্ষিকীতে ১০০ জনের বেশি অতিথি আপ্যায়নে হোটেল, রেস্তোরাঁ বা কমিউনিটি সেন্টার বুকিং দেওয়ার পূর্বে অতিথি প্রতি ৫০ টাকা হারে অগ্রিম কর আরোপের প্রস্তাব করেন। অবশ্য এই করের আওতায় ব্যবসায়িক অনুষ্ঠান না রাখার প্রস্তাব তাদের।
বর্তমানে এসব ক্ষেত্রে অগ্রিম করের বিধান নেই, তাই এই প্রস্তাবের যুক্তি হিসেবে আইসিএমএবি বলেছে, এই প্রক্রিয়ায় কর নথি নেই, এমন করদাতাদের আয়করের আওতায় আনা সম্ভব হবে। ফলে কর আদায় বাড়বে। যাঁদের আয়কর নথি আছে, তাঁরা পরিশোধিত অগ্রিম করের ক্রেডিট নিতে পারবেন বলে বাড়তি করের চাপ পড়বে না। করযোগ্য আয় না থাকলে বা কম থাকলে অতিরিক্ত অর্থ ফেরতযোগ্য হবে।
এ ছাড়া কর আদায় বাড়াতে আরও কিছু প্রস্তাব দিয়েছে আইসিএমএবি। তাদের প্রস্তাব হলো, কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ অথবা সোসাইটিস রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্ট, ১৮৬০–এর অধীন নিবন্ধিত ক্লাবের পরিচালনা পর্ষদের কোনো পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করার আগে ২৫ হাজার টাকা অগ্রিম কর পরিশোধ করতে হবে।
দেশের জ্যেষ্ঠ নাগরিক, যাঁদের আয়ের উৎস শুধু পেনশন ও সঞ্চয়পত্রের সুদ, তাঁদের আয়কর রিটার্ন দেওয়া থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রস্তাব করেছে আইসিএমএবি। এছাড়া একগুচ্ছ প্রস্তাব রয়েছে। এগুলো মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য প্রস্তাবগুলো হলো- ফ্রেইট ফরোয়ার্ডিং বাবদ পরিশোধিত মোট অর্থের ওপর দশমিক ৩০ শতাংশ হারে উৎসে কর কর্তন প্রস্তাব; পিএফ, জিএফ, এসএএফ এন্ড ডব্লিউপিএফ আয়ের ওপর ১৫ শতাংশ হারে উৎসে কর কর্তনের বিধান করে ফান্ডগুলোর রিটার্ন দাখিল অব্যাহতির প্রস্তাব; কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে রিসক ফ্যাকটর নির্ধারণ করে সম্পূর্ণ অটোমেটেড পদ্ধতিতে অডিটের জন্য করদাতা নির্বাচন প্রস্তাব; বিদেশ থেকে গৃহীত ঋণের ক্ষেত্রে, ঋণ ও মূলধনের সর্বোচ্চ অনুপাত নির্ধারণের বিধান প্রবর্তন প্রস্তাব; সরবরাহ পর্যায়ে উৎসে আয়কর কর্তনের হার যৌক্তিকভাবে হ্রাস করণ প্রস্তাব; ১৬৩ ধারা বিলোপ করার প্রস্তাব; আয়কর ও সারচার্জ মিলে একত্রে মোট আয়ের ৩০ শতাংশের বেশি আরোপ না করার বিধান সংযোজন প্রস্তাব; সকল প্রকার কৃষিজাত নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্য পণ্যকে উৎসে কর কর্তনের আওতা বর্হিভূত রাখার প্রস্তাব; ট্রাইব্যুুনালে আপিল দায়েরের জন্য ১০ শতাংশ করের পরিবর্তে সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব; হাইকোর্টে আপিলের পূর্বশর্ত হিসেবে কর পরিশোধের হার হ্রাস প্রস্তাব।