ভবন নিয়ে তিন বিভাগে উত্তেজনা
ভবনে স্থান বরাদ্দ নিয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন বিভাগের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ভবনে স্থান বরাদ্দ নিয়ে ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান, ইলেকট্রনিকস ও কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা ভবনের সামনেই একে অপরের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অবস্থান নিয়েছেন। আজ রোববার দিনভর অবস্থানের পরেও সন্ধ্যায় তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি চলে।
আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান, ইলেকট্রনিকস ও কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং পরিবেশ বিজ্ঞান ভবন’-এর তৃতীয় তলায় পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগকে বরাদ্দ দিয়ে আদেশ জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু বকর সিদ্দিক স্বাক্ষরিত ওই অফিস আদেশে বলা হয়, ’০১-০৬-২০০২, ০৬-০১-২০০৩, ২৯-০৫-২০০৩ এবং ২১-০৬-২০০৩ তারিখে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভাসমূহের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ও (ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান, ইলেকট্রনিকস ও কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং পরিবেশ বিজ্ঞান ভবন) ভবনের উত্তর ব্লক ও দক্ষিণ ব্লকের তৃতীয় তলার ২৮০০০ বর্গফুট স্থানের নির্মাণকাজ সমাপ্ত হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে উভয় ব্লকের তৃতীয় তলার ২৮০০০ বর্গফুট স্থান পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অনুকূলে বরাদ্দ প্রদান করা হলো।’
এ অফিস আদেশের বিরোধিতা করেন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস বিভাগ এবং ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে তাঁরা উপাচার্যের কার্যালয়ে অবস্থান নেন ।
রোববার সকাল থেকে শ্রেণিকক্ষ এবং ল্যাব সংকট নিরসনের দাবিতে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস বিভাগ এবং ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের শতাধিক শিক্ষার্থী ওই ভবনের দুটি প্রবেশপথে অবস্থান নেন।
অফিস আদেশ জারির পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল অফিসের লোকজন নিয়ে নতুন ভবনে উঠতে যান পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকরা। তবে ভবনের উভয় প্রবেশপথে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচির ফলে সামনের রাস্তার অপর পাশে অবস্থান নেন বিভাগের আট শিক্ষক। পরে বিকেল ৪টার দিকে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীও তাদের শিক্ষকদের সাথে যোগ দেন।
ফলে মাত্র কয়েক ফুট দূরত্বে অবস্থান নেয় তিনটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বিকেলে দুই দফা বৃষ্টি নামলেও শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ অবস্থান অব্যাহত রাখেন।
প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানিয়েছি। প্রশাসন পরবর্তী ব্যবস্থা নেবে।’
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী বর্ষণ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এমনিতেই আমাদের শ্রেণিকক্ষ এবং ল্যাবের জন্য জায়গার সংকট। তৃতীয় তলায় আমাদের বিভাগের ল্যাব স্থাপন করা হবে। শ্রেণিকক্ষ এবং ল্যাবের সংকট নিরসনেই আমাদের এ অবস্থান।’
পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক এ এন এম ফখরুদ্দিন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক অফিস আদেশ জারির পরও আমাদের এ ভবনে স্থানান্তরে বাধা দেওয়া হচ্ছে। অফিস আদেশ বাস্তবায়নের দাবিতেই আমাদের এ অবস্থান।’ একই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থান অব্যাহত থাকবে।’
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মদ হানিফ আলী এনটিভি অনলাইনকে মুঠোফোনে বলেন, ‘আমাদের দাবি নিয়ে সকাল থেকেই উপাচার্যের অফিসে আছি।’
এদিকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তিন বিভাগের সভাপতিকে নিয়ে বৈঠক করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।
বিজ্ঞান ভবনে স্থানান্তরের দাবিতে গত বুধবার থেকেই মৌন মিছিল, মানববন্ধন ও উপাচার্য অফিস প্রাঙ্গণে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।