রাবিতে মিছিল-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) মিছিল-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে প্রগতিশীল ছাত্র জোট। এ সময় জোট নেতারা ক্যাম্পাসে মতিহার থানা স্থানান্তরের তৎপরতা বন্ধেরও দাবি জানান।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্র ইউনিয়নের দলীয় টেন্টে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন ছাত্র ইউনিয়নের বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের সভাপতি আয়াতুল্লাহ খোমেনি।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব প্রক্টরিয়াল বডির হাতে ন্যস্ত থাকার কথা। সেখানে ওই দায়িত্ব পালন করছে পুলিশ প্রশাসন। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের চরম ব্যর্থতা। বিশ্ববিদ্যালয়ে থানা বা পুলিশফাঁড়ি স্থাপন করে কোনোভাবেই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন সম্ভব নয়। বরং পুলিশের দুর্নীতিগ্রস্ত সদস্যদের চাঁদাবাজি-নৈরাজ্যের হার বাড়বে। তা ছাড়া এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারণার সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ।
ছাত্রনেতারা জানান, ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ইসলামী ছাত্রশিবির ক্যাম্পাসের বঙ্গবন্ধু হলে হামলা চালালে ছাত্রলীগ নেতা ফারুক হোসেন নিহত হন। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ক্যাম্পাসে সব ধরনের মিছিল-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
বছরখানেক যাওয়ার পর বিভিন্ন সংগঠন ক্যাম্পাসে মাঝেমধ্যে তাদের মিছিল-সমাবেশ করত। এর মধ্যে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে বাণিজ্যিকভাবে সান্ধ্যকালীন কোর্স চালুর প্রতিবাদে আন্দোলনে নামে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ২ ফেব্রুয়ারি পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতারা একযোগে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায়। সে সময় পুলিশের ছররা গুলিতে অর্ধশতাধিক আন্দোলনকারী আহত হন বলে অভিযোগ করেন প্রগতিশীল ছাত্র জোটের নেতারা। তাঁরা জানান, এর পর থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ২০১০ সালে জারি করা প্রজ্ঞাপন কঠোরভাবে বাস্তবায়নকাজ শুরু করে।
প্রগতিশীল ছাত্রজোটের অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে রাকসু ও টিএসসিসি (টিচার স্টুডেন্ট কালচারাল সেন্টার) কার্যকর করা, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করা, শিক্ষা-বাণিজ্য বন্ধ করা এবং অবিলম্বে ক্যাম্পাসের পরিবহন ব্যবস্থা চালু করা।
এসব দাবি না মানলে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকি দেন ছাত্রনেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ফেডারেশনের রাবি শাখার সভাপতি ফারুক ইমন, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি প্রদীপ মার্ডি, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সোহরাব হোসেন প্রমুখ।
গত ৩১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের ৪৫৮তম সভায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মতিহার থানা স্থানান্তর সম্পর্কে প্রস্তাব উত্থাপন করার পর থেকেই ক্যাম্পাসে এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সর্বশেষ গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাথে আলোচনার সময় উপাচার্য এ সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত করার কথা জানান।