জাবি শিক্ষকদের পদত্যাগপত্র ও শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) পদত্যাগপত্র জমাদানকারী কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ এবং ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ২৫ জন শিক্ষক তাঁদের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। একই সাথে আমরণ অনশন কর্মসূচিও প্রত্যাহার করেছেন শিক্ষার্থীরা।
আজ বুধবার সন্ধ্যায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানা গেছে।
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন এবং ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এমদাদুল হক এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। অন্যদিকে এ দুই বিভাগের শিক্ষার্থীরা এক যৌথ সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চলমান আমরণ অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহারের ব্যাপারে নিশ্চিত করেন।
চলমান অচলাবস্থা নিরসনে শিক্ষক সমিতি ও ডিন কমিটির হস্তক্ষেপের পর দুই বিভাগের শিক্ষকরা এই সিদ্ধান্ত নেন বলে জানা গেছে। নতুন ভবনে স্থান বরাদ্দ সংশ্লিষ্ট তিন বিভাগের অচলাবস্থা নিরসনে গত শনিবার প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এস এম বদিয়ার রহমানকে আহ্বায়ক ও ফার্মেসি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তারকে (শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক) সদস্য-সচিব করে আট সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে শিক্ষক সমিতি। পাশাপাশি কাজ করতে থাকে ডিন কমিটি।
কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিন এবং ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এমদাদুল হক জানান, চলমান সংকট নিরসনের আগ পর্যন্ত কোনো বিভাগ ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলা ব্যবহার করতে পারবে না বলেও আজকের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের ব্যাপারে আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানো হতে পারে।
এ ব্যাপারে শিক্ষক সমিতি থেকে করা কমিটির সদস্য-সচিব মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘অনশনরত শিক্ষার্থী ও পদত্যাগপত্র জমাদানকারী শিক্ষকদের সাথে কথা বলেছি আমরা। সব পক্ষের ঐকমত্যের ভিত্তিতে একটি সমাধান বের করা হবে এমন আশ্বাসে তাঁরা পদত্যাগপত্র ও কর্মসূচি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় ‘কম্পিউটার বিজ্ঞান ও ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান ভবন’-এর নবনির্মিত তৃতীয় তলার ২৮ হাজার বর্গফুট জায়গা পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগকে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ১৫ জন এবং ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগের ১০ জন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দেন। এ ছাড়া এ ভবনের তৃতীয় তলায় স্ব স্ব বিভাগকে বরাদ্দ দেওয়ার দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন ওই দুটি বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
গত ৫ এপ্রিল এক প্রশাসনিক আদেশের মাধ্যমে নবনির্মিত ভবনের তৃতীয় তলা পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগকে বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে শ্রেণিকক্ষ ও ল্যাবের স্থান সংকট বলে পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগকে নতুন ভবনে উঠতে বাধা দেয় আগে থেকে ওই ভবনে অবস্থান নেওয়া ভূতাত্ত্বিক বিজ্ঞান বিভাগ এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। ফলে এক মাস ধরে তিনটি বিভাগে অচলাবস্থা বিরাজ করছে।