শিক্ষক লাঞ্ছনার বিচার দাবিতে জাবিতে মানববন্ধন-মিছিল
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাকিব আহমেদকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত পুলিশ সার্জেন্টকে স্থায়ী বরখাস্তের দাবিতে মানববন্ধন ও মৌন মিছিল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি।
আজ সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার চত্বরে এ মানববন্ধন হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাসহ সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক খবির উদ্দীন বলেন, ‘পুলিশ নাগরিকদের নিরাপত্তা বিধান করবে। কিন্তু তা না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পরিচয় পাওয়ার পর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে পড়া মর্মান্তিক। এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সোচ্চার থাকবে। আমরা এখানে কোনো আইওয়াশ মানব না। ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে চিরতরে বরখাস্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’
পরে একই স্থান থেকে মৌন মিছিল বের করেন শিক্ষকরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
মৌন মিছিল-পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মাফরুহী সাত্তার বলেন, ‘একটি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে আমাদের দাবির বাস্তবায়ন না ঘটলে প্রয়োজনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা ডেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’
এ সময় অন্যান্যের উপস্থিত ছিলেন সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আমির হোসেন, কলা ও মানবিকী অনুষদের ডিন অধ্যাপক সৈয়দ মোহাম্মদ কামরুল আহছান, জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক আবদুল জব্বার হাওলাদার, অধ্যাপক হানিফ আলী, অধ্যাপক শামছুল আলম, অধ্যাপক অসিত বরণ পাল, অধ্যাপক কামরুল আহসান, অধ্যাপক মো. শরিফ উদ্দিন, অফিসার সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বাবুল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুর রহমান জনি প্রমুখ।
এর আগে শনিবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর উত্তরা হাউস বিল্ডিং এলাকায় শেখ ইমরান আহমেদ নামের ট্রাফিক পুলিশের একজন সার্জেন্টের হাতে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম অধ্যয়ন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাকিব আহমেদ। এ সময় রাকিব আহমেদ নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বলে পরিচয় দিলে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন সার্জেন্ট ইমরান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ও রাকিবের মা বাবাকে নিয়ে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। একপর্যায়ে ওই কর্মকর্তা রাকিবের গলা চেপে ধরেন। ওই সময় আশপাশে থাকা আরো কয়েকজন পুলিশ তাঁকে মারধর করতে থাকেন।
এ ঘটনার প্রতিবাদে এবং ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিচার দাবিতে রোববার দুপুরে প্রায় সোয়া দুই ঘণ্টা ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পুলিশ সার্জেন্ট ইমরানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে পুলিশ। পাশাপাশি দুটি তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে।