পাবনায় নির্বাচনি সহিংসতায় এইচএসসি পরীক্ষার্থী নিহত, নৌকার প্রার্থীসহ আটক ৩
পাবনা সদর উপজেলার চরতারাপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে মোহাম্মদ নাসিম (২০) নামের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও পাঁচ জন।
নিহত মোহাম্মদ নাসিম উপজেলার দুবলিয়া হাজী জসিম উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। তিনি তারাবাড়িয়া গ্রামের নায়েব আলীর ছেলে।
এদিকে, এ ঘটনার পরই চরতারাপুর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রবিউল হক টুটুল নিহত নাছিমকে তাঁর সমর্থক বলে দাবি করেছেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনারস প্রতীকের ছিদ্দিকুর রহমানও নাছিমকে নিজের সমর্থক বলে দাবি করেন।
এরই মধ্যে এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী রবিউল হক টুটুল, সুজানগর পৌর আওয়ামী লীগ সভাপতি ফেরদৌস আলম ফিরোজ ও আওয়ামী লীগ নেতা মতিন জোয়াদ্দারকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় তারাবাড়িয়া বাজারে নৌকার প্রার্থী রবিউল হক টুটুল ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আনারস প্রতীকের সিদ্দিকুর রহমানের সমর্থকদের পৃথক প্রচার মিছিল মুখোমুখি হলে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ সময় নাসিম এ ঘটনার ছবি নিজের মুঠোফোনে ধারণ করায় কয়েকজন যুবক নাসিমের ওপর হামলা চালিয়ে ছুরিকাঘাত করেন। এ সময় বাধা দিতে গেলে আরও কয়েকজন ছুরিকাহত হন। পরে পুলিশ ও স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে পাবনা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক নাসিমকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত অপর একজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমান খান নাসিমকে নিজের কর্মী বলে দাবি করছেন। তবে পরিবার বলছে, নাসিম কোনো প্রার্থীর সমর্থক ছিলেন না।
পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে পাবনা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চরতারাপুর ইউপির নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী রবিউল হক টুটুল দাবি করেন, নিহত নাছিম তাঁর সমর্থক ছিলেন। তাঁদের পরিবার এবং সবাই নৌকার পক্ষে কাজ করছিলেন। মিছিলের ভিডিও করার সময় ছিদ্দিকের নেতৃত্বে তাঁর সমর্থকেরা ছুরিকাঘাত করে।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আনারস প্রতীকের ছিদ্দিকুর রহমান ওরফে ছিদ্দিক খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘সুজানগর থেকে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ এসে বোমা ফাটায় এবং আনারসের সমর্থক নাছিমকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে।’
পাবনার সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রোকোনুজ্জামান বলেন, ‘আমরা সবাই ঘটনাস্থলে গিয়েছি। তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের পর জানা যাবে কীভাবে নাছিম নিহত হল।’