একসময়ের দাপুটে নায়িকা, এখন সংসার চলছে ত্রাণে!
‘সোহরাব রুস্তম’ খ্যাত নায়িকা বনশ্রী। ‘সোহরাব রুস্তম’ ছবির মধ্য দিয়ে ১৯৯৪ সালে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু করেন তিনি। পরিচালক ছিলেন মমতাজ আলী। প্রথম ছবিতেই নায়ক হিসেবে পেয়েছেন তখনকার সুপারস্টার ইলিয়াস কাঞ্চনকে।
একই বছর মুক্তি পায় দ্বিতীয় ছবি ‘মহা ভূমিকম্প’। সুভাষ ঘোষ পরিচালিত এই ছবিতে বনশ্রী দুই নায়ক মান্না ও আমিন খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। তিনি অভিনয় করেছেন নায়ক রুবেলের বিপরীতেও।
কম সময়ে যেমন খ্যাতি পেয়েছেন, হারিয়েছেনও দ্রুত। বর্তমানে তাঁর অবস্থা শোচনীয়। ত্রাণ নিয়ে চালাচ্ছেন সংসার। রাতারাতি তারকা বনে যাওয়া বনশ্রী এখন হতদরিদ্র। করোনাভাইরাসের প্রকোপ শুরু হওয়ার পর থেকেই তাঁকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির কাছ থেকে ত্রাণ গ্রহণ করতে দেখা যায়।
২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়ী তহবিল গ্রহণ করেন বনশ্রী। কিছুটা স্বস্তি ফিরে আসে তাঁর জীবনে। এর পরও কেন ত্রাণ নিতে হবে তাঁকে?
উত্তরে বনশ্রী এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘কয়েক বছর ধরে আমি মাসে টাকা পাচ্ছি ১৭ হাজার ৩৮০ টাকা। বাকি টাকা ট্যাক্স হিসেবে কেটে রাখা হয়। এই টাকা দিয়ে আমি বাড়ি ভাড়া দিচ্ছি। আমার ছেলের পড়াশোনা চালাচ্ছি। আমার বড় কয়েকটি অসুখ রয়েছে। তার চিকিৎসা করাতেই মাসে আট-দশ হাজার টাকা চলে যায়। প্রতি সপ্তাহে ইনসুলিন নিতে হয়। সব মিলিয়ে কোনোরকম সংসারটা টেনে নিচ্ছি। পাশাপাশি আমি ঘরে বসেই সেলাইয়ের কাজ করছিলাম। তবে করোনাভাইরাস আসার পর আর সেলাইয়ের কাজ পাই না। যে কারণে এফডিসিতে গিয়ে ত্রাণ নিতে হয়।’
বনশ্রী আরো বলেন, ‘এফডিসিতে যাই, শিল্পী হিসেবে ত্রাণ গ্রহণ করি। আমি তো রাস্তায় দাঁড়িয়ে ত্রাণ নিতে পারি না। শিল্পী সমিতি ও জায়েদ খানকে ধন্যবাদ। আমি সমিতির সদস্য না হওয়ার পরও আমাকে ফোন দিয়ে ত্রাণ সংগ্রহ করতে বলেন। ভবিষ্যতে যদি শিল্পীদের আবাসনের কোনো ব্যবস্থা হয়, সেখানে যদি আমার একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়—সেটাই আমার দাবি। সবাই দোয়া করবেন, আমার একমাত্র ছেলেকে যেন মানুষ করে মরতে পারি।’