সবে দুই মাস, প্রেমের গুঞ্জন আসতে বছর লেগে যায় : দীঘি
‘বাবা জানো, আমাদের একটা ময়না পাখি আছে না, সে আজকে আমার নাম ধরে ডেকেছে’... মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোনের একটি বিজ্ঞাপনে এমন সংলাপ বলে তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন প্রার্থনা ফারদিন দীঘি। এরপর শিশুশিল্পী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও জিতেছেন। সেই দীঘি নায়িকা হয়েছেন সম্প্রতি। নায়িকা দীঘির খোঁজ নিতে দুদিন আগে বিকেলে হোয়াটসঅ্যাপে নক দেওয়া হয়েছিল। দীঘি জানালেন, ‘আমি এখন একটু জিমে যাব, সন্ধ্যার পর কথা বলি?’
কথামতো নায়িকা দীঘির সঙ্গে এনটিভি অনলাইনের কথা জমল সন্ধ্যার পর। কথার ঝাঁপি খুললেন তাঁর সেই ময়না পাখি, সিনেমাসহ প্রেমের গুঞ্জন নিয়ে—
এনটিভি অনলাইন : আপনার সেই ময়না পাখির বয়স কত এখন?
দীঘি : আসলে ময়না পাখি আমার একটা সত্যি সত্যি ছিল। ময়না পাখি আমি একটা পালতাম। বাট আনফরচুনেটলি ওটা মারা গেছে। বেঁচে থাকলে হয়তো সাত-আট বছর হয়ে যেত।
এনটিভি অনলাইন : ময়না পাখির সেই দীঘি তো এখন সিনেমার নায়িকা, তা নায়িকা হওয়ার পর কী কী পরিবর্তন এসেছে জীবনে?
দীঘি : আমার কাছে পরিবর্তনটা খুব বেশি লাগেনি। কারণ শুটিং-জীবনটা আমার জীবনের সঙ্গে একদম বাঁধা। কারণ, আমি যেদিন প্রথম সেটে ঢুকি, আমার সব চেনা মনে হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, এই তো ডিরেক্টর আমার চেনা, ক্যামেরাম্যান আমার চেনা, সবকিছু চেনা—সেট, জায়গা আমার খুব ফ্যামিলিয়ার লাগছিল, খুব ভালো লাগছিল। তো আমার মনে হয়, পরিবর্তনটা একটাই হয়েছে। তখন শিশুশিল্পী হিসেবে শুটিং করতাম আর এখন নায়িকা হিসেবে শুটিং করি। জাস্ট এতটুকুই...
এনটিভি অনলাইন : নবাগত শান্ত খানের নায়িকা হওয়ার আগে নাকি দেশের একাধিক জনপ্রিয় নায়কের নায়িকা হওয়ার প্রস্তাব ফিরিয়েছেন? তা ঠিক কী কারণে জনপ্রিয় নায়কদের প্রস্তাব ফিরিয়ে শান্ত খানের নায়িকা বনে গেলেন?
দীঘি : আসলে প্রস্তাবগুলো যখন এসেছিল, তখন আমি ক্লাস সিক্স থেকে টেন, এমন একটা অবস্থায় ছিলাম। স্পেশালি ক্লাস সিক্স থেকে এসএসসি পর্যন্ত আমার অনেক প্রস্তাব এসেছে, কিন্তু ওই সময়ে বাবা একদমই নারাজ ছিল, কোনো শুটিং করতে দেবে না, ছবি করতে দেবে না। বাবার পরিকল্পনা ছিল, আমাকে এসএসসি পরীক্ষা না দেওয়ানো পর্যন্ত ছবি করতে দেবে না। তো পড়াশোনার জন্য অনেক কাজ ছাড়তে হয়েছে। এবং যখন এসএসসিটা দিই, তারপর বাছতে-বাছতে অনেক কিছু ব্যাটে-বলে মিলছিল না, এই যেতে-যেতে অনেক ছবি যাওয়ার পরে... সবশেষে শাপলা মিডিয়াতে অভিষেক হয়ে গেল, শান্ত খানের সঙ্গে। যদিও অভিষেকটা হওয়ার কথা ছিল ‘বঙ্গবন্ধু’ দিয়ে। তারা আমাকে নিয়ে চেয়েছে এতগুলো ছবি করতে। আসলে আমি এখনো জানি না এতগুলো সিনেমা হবে কি না। কারণ, সবার স্ক্রিপ্ট লেখা এখনো শেষ হয়নি। তারা পাঁচজন পরিচালক দিয়ে আমাকে নিয়ে পাঁচটা সিনেমা করতে চেয়েছে। আশা করি, ভালো কিছু হবে।
এনটিভি অনলাইন : আপনার বেশ কয়েকটি সিনেমার নায়ক হতে যাচ্ছেন শান্ত খান। কোনো জুটি সফল হলে এমনটা দেখা যায়। তেমন কোনো সম্ভাবনা ছাড়াই এক নায়কের সঙ্গে একাধিক সিনেমা করছেন...
দীঘি : আসলে জুটি সফল হবে কি না, এটা দর্শকের হাতে। আর আমাদের যে সময়টা যাচ্ছে, এত সময় কাজের কিংবা ছবির খুব অভাব। আমি যেটা নিজে ফিল করি বা আমরা সবাই যেটা দেখতে পাচ্ছি, আমরা যদি পরপর নতুন জুটি হই, দর্শকদের ছবি উপহার দিই, আমার মনে হয় জিনিসটা মন্দ হয় না। আর তার চেয়ে বড় কথা, দেখলে যদি ভালো লাগে। অবশ্য অনেক কথা শুনছি, ভালো লাগছে নাকি জুটিটা অনেকের কাছে অলরেডি। ইনশা আল্লাহ, আমি আশাবাদী, সফল হবে জুটিটা এবং মানুষ আমাদের ভালোভাবে গ্রহণ করে নেবে।
এনটিভি অনলাইন : সিনেমায় কাজ শুরুর পর একাধিক প্রস্তাব পাচ্ছেন নিশ্চয়ই। শাপলা মিডিয়ার বাইরে এখন কোনো কাজ না করার শর্ত আছে?
দীঘি : সবারই একটা ভুল ধারণা, আমি শাপলা মিডিয়ার বাইরে কাজ করছি না। অবশ্যই আমি শাপলা মিডিয়ার বাইরে কাজ করছি এবং দুটো সিনেমা আমার হাতে আছে। একটার তো ঘোষণা হয়ে গেছে, অন্যটার ঘোষণা আপনারা খুব শিগগিরই পাবেন। তার চেয়ে বড় কথা, আমি সবার সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমার সঙ্গে শান্তর পাঁচটা সিনেমার কথা হয়েছে মানে এই নয় যে আমি শান্ত ছাড়া কাজ করব না কিংবা আমি অন্য কোনো নায়কের সঙ্গে কাজ করব না। অবশ্যই করব, এর প্রমাণ আমি বাইরে কাজ করছি। আমি সবার সঙ্গে কাজ করতে চাই, আমি কোথাও বাঁধা হতে চাই না, কারো পার্টিকুলার হতে চাই না।
এনটিভি অনলাইন : নায়িকা হলেই তাঁদের প্রেম বা বিয়ে নিয়ে গুঞ্জন রটে। আপনাকে নিয়ে এমন কী কী গুঞ্জন আছে বলে শুনেছেন?
দীঘি : নায়িকা তো মনে হয় সব মিলিয়ে দুই মাস হলো হলাম। সেপ্টেম্বরে শুটিং শুরু করেছি, সব মিলিয়ে দুই মাস হলো নায়িকা হলাম। প্রেমের গুঞ্জনটা আসতে বছরখানেক লেগে যায়। এখনো আমার নামে এমন কিছু নিজে শুনিনি। তো আমার মনে হয়, আমি শোনার আগে আপনারা সাংবাদিক ভাইয়েরা, আমাদের আগে ভালো শুনতে পারেন। আপনাদের কাছে চলে যায় বা আপনাদের কাছে এমন গসিপ চলে যায়। আপনারা জানলে আমাকে আগে জানাবেন, তাহলে আমি বেশি খুশি হব।