ছেলের জন্যই রান্না শিখেছি : ববিতা
-কেমন আছেন? আপনাকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা
-আপনাকেও নববর্ষের শুভেচ্ছা।
বছরের প্রথম দিন এভাবেই শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে কথা শুরু হয় বাংলাদেশের কিংবদন্তি চিত্রনায়িকা ববিতার সঙ্গে। সম্প্রতি কানাডা থেকে দেশে ফিরেছেন তিনি। গত শনিবার ববিতার সঙ্গে দেখা করতে ও শুভেচ্ছা জানাতে তাঁর বাসায় গিয়েছিলেন বাপ্পারাজ, মৌসুমী,ওমর সানী, ফেরদৌস, পূর্ণিমা, আমিন খান, পপি ও রিয়াজ। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন ববিতার বোন চম্পাও। নতুন বছরের পরিকল্পনাসহ আরো অনেক বিষয় নিয়ে এনটিভি অনলাইনের নাইস নূরের সঙ্গে কথা বলেন ববিতা।
এনটিভি অনলাইন : নতুন বছরে ছেলে অনিকের সঙ্গে কী কথা হলো আপনার?
ববিতা : অনিকের সঙ্গে নতুন বছরের প্রথম শুভেচ্ছা বিনিময় করেছি। অন্য মায়েরা ছেলেকে নিয়ে যেমন চিন্তা করে আমিও করি। কানাডায় অনেক বরফ পড়ে। গাড়ি অনেক সাবধানে চালাতে হয়। আমি আমার ছেলেকে বলেছি, ‘বাবা, তুমি বরফের মধ্যে সাবধানে গাড়ি চালিও।’
এনটিভি অনলাইন : এবার তো কানাডায় ছেলের কাছে অনেকদিন থেকেছেন। কেমন সময় কাটল?
ববিতা : আমি অনেক রান্না করেছি এবার। ছেলের জন্য প্রায় পাঁচ মাসের খাবার রান্না করে রেখে এসেছি। আমি নিজেই সুপার শপে গিয়ে বাজার করেছি। হালাল গরুর মাংস ও চিকেন কিনেছি। যাতে অনিক ফ্রিজ থেকে খাবার বের করে গরম করে খেতে পারে।
এনটিভি অনলাইন : আপনার তো ভালো রান্না করার সুনামও রয়েছে...
ববিতা : মজার ব্যাপার হলো, আমি কিন্তু আগে রান্না করতে পারতাম না। মেয়েরা তো রান্না শেখে মা কিংবা খালাদের কাছ থেকে। কিন্তু আমার সেটা শেখা হয়নি। ১৩ বছর বয়সে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেছি। এরপর তো সারাক্ষণ শুটিং আর শুটিং। একদিন আমার ছেলে এসে আমাকে বলল, ‘আমার বন্ধুর মা খাবার রান্না করেছে। খুব মজা লেগেছে আমার।’ এরপর আমি ভাবলাম, ‘আমি হয় তো ভালো একজন আর্টিস্ট হতে পারি, কিন্তু মা হিসেবে ভালো নই (হাসি)। আমাকেও ছেলের জন্য রান্না করতে হবে।’ এর পরই মূলত রান্না করার সিদ্ধান্ত নেই। বলতে পারেন, শুধু ছেলের জন্যই রান্না শিখেছি। সিদ্দিকা কবিরের লেখা রান্নার বই আমি কিনেছি। সেখান থেকে রান্নার রেসিপি আমি জেনেছি। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন খাবারের রেসিপি লেখার জন্য একটি মোটা খাতাও আমার রয়েছে। সেখানে আমি নিজেই বিভিন্ন রান্নার রেসিপি জেনে রেধেছি। টেলিভিশন রান্নার অনুষ্ঠান আমি দেখি। সেখানে দেখানো কোনো খাবার পছন্দ হলে সেই খাবারের রেসিপি আমি খাতায় লিখে রাখি।
এনটিভি অনলাইন : গত শনিবার সন্ধ্যায় তো আপনার বাসায় অনেক তারকা আড্ডা দিয়েছেন। কেমন লাগল তাঁদের সঙ্গে সময় কাটাতে?
ববিতা : ওরা সবাই আমাকে দেখতে এসেছিল। আসলে ওদের সবার সঙ্গে আমি অনেক কাজ করেছি। আমাদের আত্মার সম্পর্ক। সবাই আমাকে অনেক ভালোবাসে এবং সম্মান করে। আমিও সবাইকে ভালোবাসি। আমরা সেদিন অনেক গল্প করেছি। মজা করেছি। বিভিন্ন বিষয়ে স্মৃতিচারণা করেছি। শুটিংয়ের দিনগুলোর কথা মনে করেছি। খুব সুন্দর একটা সন্ধ্যা কেটেছে আমাদের। রাতে আমরা একসঙ্গে ডিনার করেছি। চম্পা অনেক হেল্প করেছে। চম্পা সবসময় অনেক সুন্দর। এ ছাড়া যারা এসেছে তারাও আমাকে রান্নায় সহযোগিতায় করেছে। এখন তো আর এফডিসিতে যাওয়া হয় না। আমি ভাবছি, নিয়মিত এ ধরনের ছোট মিলনমেলার আয়োজন করব। একবারে অনেকজনকে ডাকলে আর গল্প করা হয় না। তখন শুধু ফরমালেটিস মেইনটেইন করা হয়। কেউ খাবার ঠিক মতো পেল কি না, সেটা দেখতে হয়। আর ১০ জন গ্রুপ করে ডাকলে অনেক গল্প করা যায়।
এনটিভি অনলাইন : এখন আপনি একদম ছবিতে অভিনয় করছেন না। এর কারণ কী?
ববিতা : ভালো গল্প পাই না। দেখুন, পাশের দেশ ভারতে অমিতাভ ও রেখা এখনো ছবিতে অভিনয় করছেন কারণ তাঁদের ওপর নির্ভর করে গল্প তৈরি হচ্ছে। দাপটের সঙ্গে অভিনয় করছেন তাঁরা। আমাকে যদি এখন অভিনয়ের প্রস্তাব শুধু মা ও ভাবির চরিত্রেই দেওয়া হয়, তাহলে কি আমার করা উচিত?এত দিনে যা অর্জন করেছি আমি চাই না সেটার বদনাম হোক। পছন্দ অনুযায়ী চিত্রনাট্য পেলে অবশ্যই কাজ করব। আর এখন তো নিজেকে এবং পরিবারকে নিয়ে ব্যস্ত থাকি। অফুরন্ত সময়ও নেই।
এনটিভি অনলাইন : দেশে ও বিদেশে আপনার অসংখ্য ভক্ত রয়েছে। তাঁদের নতুন বছরে কিছু বলবেন কি?
ববিতা : আমাদের দেশ এখন অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের সব মানুষের জন্য ভালোবাসা ও শুভকামনা। আমি চাই সবাই ভালো থাকুক। সুন্দর হোক আগামীর পথ চলা। সবাই ভালো থাকলে নিজের মধ্যে আলাদা প্রশান্তি কাজ করে।