হৃদরোগের ঝুঁকি কমায় চকোলেট?
চকোলেট খেতে কার না ভালো লাগে! রংবেরঙের হরেক রকম চকোলেট দেখে জিভে যেন জল চলে আসে। আর যদি জানা যায় চকোলেট হৃদযন্ত্র এবং মস্তিস্কের জন্য ভালো- তাহলে তো কথাই নেই। হ্যাঁ,সম্প্রতি একটি গবেষণায় এ তথ্যই জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্যবিষয়ক ওয়েবসাইট ওয়েবএমডিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ডক্টর অস্কার এইচ. ফ্রাঙ্কো তাঁর গবেষণায় বলেন, নিয়মিত চকোলেট খেলে হৃদরোগের ঝুঁকি থেকে মুক্ত থাকা যায় এবং যাঁরা নিয়মিত চকোলেট খান তাঁদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশ লোকের স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা কমে।
তবে গবেষণায় এও বলা হয়, চকোলেট, চকোলেট বার, চকোলেট কুকি এবং বিভিন্ন ধরনের পানীয়তে যে পরিমাণ চিনি থাকে তাতে শরীরের ওজন বেড়ে যায়। ওজনাধিক্যের ফলে হৃদপিণ্ডে সমস্যা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ওজন কমানোর জন্য শরীরচর্চা জরুরি। চকোলেট খাওয়ার পাশাপাশি তাই ব্যায়াম করতে হবে। তাই বলে যখন ইচ্ছা তখনই চকোলেট খেলে চলবে না। সেখানেও আছে নিয়মকানুন।
ফ্রাঙ্কো ও তাঁর সহকর্মীরা মিলে এক লাখ মানুষের ওপর এই গবেষণা চালায়। ফলাফলে দেখা যায়, যেসব ব্যক্তি বেশি চকোলেট খায় তারা চকোলেট কম খাওয়া লোকদের তুলনায় ৩৭ শতাংশ কম হৃদরোগের ঝুঁকিতে থাকে। এ ছাড়া এরা ২৯ শতাংশ কম স্ট্রোকের ঝুঁকিতেও পড়ে।
গবেষণায় বলা হয়,চকোলেট কখনো কখনো উচ্চ রক্তচাপের বিরুদ্ধে কাজ করে। উচ্চরক্তচাপ স্ট্রোক এবং হৃদরোগের একটি বড় কারণ। চকোলেটের উপাদান পলিফেনলস এবং এন্টি অক্সিডেন্ট শরীরের নিটরিক অক্সাইডকে বাড়িয়ে দেয়। যা রক্তচাপকে স্বাভাবিক করে এবং রক্তের চলাচলকে ভালো রাখে।
তবে কতটুকু চকোলেট খেতে হবে? গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের ওপর এই গবেষণা করা হয়েছে তারা দিনে একটি করে চকোলেট খেয়েছে। অংশগ্রহণ কারীরা এই নিয়ম পালন করেছে আট থেকে ১৬ বছর পর্যন্ত।
কোন চকোলেট ভালো, কালো চকোলেট না দুধসম্বৃদ্ধ চকোলেট? বিষয়টি গবেষকরা আলাদা করেননি। চকোলেট বার, চোকোলেট দুধ, বা চকোলেট কুকি ইত্যাদি যেকোনো চকোলেটই এখানে ব্যবহৃত হয়েছে। তবে ডক্টর ফ্রাঙ্কোর মতে, কালো চকোলেট হৃদপিণ্ডের জন্য বেশি ভালো।
চকোলেট হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়। তবে এটি হৃদরোগকে কমিয়ে আনে কি না এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি গবেষণায়। তাই চকোলেট খেতে ঝাপিয়ে পড়বেন না। আর আপনার বয়স যদি ষোলোর উপরে হয় তাহলে তো চকোলেট ভেবেচিন্তেই খাওয়া উচিত!