রক্ত পরীক্ষায় জানা যাবে ধূমপান ছাড়ার কৌশল
কোন ধূমপায়ীর ক্ষেত্রে ধূমপান ছাড়ার কোন পদ্ধতি কার্যকর হবে তা জানা যাবে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে। কারণ কারো শরীরে নিকোটিন কী হারে মিশে যায় তার ওপরই নির্ভর করে ধূমপান ছাড়ার পদ্ধতি।
যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব পেনসিলভানিয়ার পেরেলম্যান স্কুল অব মেডিসিন ও এর বাইরের একদল গবেষক মানুষের রক্ত পরীক্ষা এবং এর সঙ্গে ধূমপান ছাড়ার কার্যকর কৌশলের যোগসূত্র নিয়ে গবেষণা করেন। এতে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোস্তত্ত্ববিদ্যার শিক্ষক কারিন লারম্যান। ১১ জানুয়ারি চিকিৎসা বিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেট রেসপিরেটিরি মেডিসিনে এ বিষয়ের গবেষণা নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ধূমপান ছাড়ার কৌশল হিসেবে পরিচিত ভেরেনিক্লিন বা চ্যানটিক্স ওষুধ সেবন অথবা নিকোটিন প্যাচ ব্যবহারের কার্যকারিতা পরীক্ষা করে দেখেন।
নিকোটিন প্যাচ দেখতে অনেকটা গজ ব্যান্ডেজের মতো। এর মধ্যে নির্দিষ্ট মাত্রায় নিকোটিন থাকে। ত্বক লাগানো হলে এর মধ্যে থাকা নিকোটিন শরীরের মধ্যে প্রবেশ করে এবং নিকোটিনের চাহিদা দূর করে।
কারিন লারম্যান বলেন, ধূমপান ছাড়তে ইচ্ছুক বা ছেড়েছেন এমন ব্যক্তিদের মধ্যে ওষুধ বা নিকোটিন প্যাচের ভিন্ন রকম কার্যকারিতা লক্ষ করা গেছে। ব্যক্তিভেদে কার্যকারিতার ভিন্নতার কারণ খুঁজে বের করাই ছিল তাঁদের গবেষণার লক্ষ্য।
চার বছরব্যাপী গবেষণায় এক হাজার ২০০ ধূমপায়ীর ওপর পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানো হয়। এসব ধূমপায়ী ১১ সপ্তাহ ধরে ধূমপান ছাড়ার চেষ্টা করেন। তাঁদের মধ্যে একটি দলকে দেওয়া হয় ধূমপান ছাড়ার ওষুধ আর অন্যদের নিকোটিন প্যাচ।
গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব ধূমপায়ীর শরীরে স্বাভাবিকভাবে নিকোটিন মিশে যায় তাঁদের ক্ষেত্রে ধূমপান ছাড়ার ওষুধ ভালো কাজ করে। কিন্তু যাঁদের শরীরে নিকোটিন ধীরে মেশে তাঁদের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করে নিকোটিন প্যাচ।
গবেষক লারম্যান বলেন, এখন রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হবে কারো শরীরে নিকোটিন কী হারে মিশছে। হার স্বাভাবিক হলে তাঁর ক্ষেত্রে ধূমপান ছাড়ার ওষুধ কার্যকর হবে। আর হার ধীর হলে প্রয়োজন হবে নিকোটিন প্যাচ।