শকুনরাও মেনে চলে সীমান্ত আইন!
একটি দেশের সীমারেখা মানুষ সৃষ্টি করে। দেশের জনগণের নিরাপত্তা এবং রাজনৈতিক কারণে গড়ে উঠেছে এসব সীমানা। কিন্তু পশুপাখির ক্ষেত্রে এই সীমানা নয়। পশুপাখি অবশ্য এসব সীমা মানেও না। তবে ব্যতিক্রমী ঘটনা দেখা গেল স্পেনে। সেখানে বসবাস করা শকুনরা সীমান্তরেখা অতিক্রম করে না। সীমারেখার অন্যদিকে পর্তুগালের দিকে কখনো কোনো শকুন যেতে দেখা যায়নি। কেন এমনটা করে তারা?
শকুন মাংসাশী প্রাণী, মৃত পশুর গলিত মাংসের ওপর তারা বেঁচে থাকে। অনেক দূর পর্যন্ত খাবারের সন্ধান জানতে পারে তারা। যেখানেই মৃত প্রাণীর চিহ্ন দেখা যায়, সেখানেই ছুটে যায় খাবারের খোঁজে। মানুষের মতো সীমারেখা অনুযায়ী তো তাদের খাবার খোঁজার কথা নয়। শুধু স্পেনের গণ্ডির মধ্যেই তো শকুনদের ওড়ার কথা নয়!
ম্যাপে দেখা যাচ্ছে, স্পেনের দুই প্রজাতির গ্রিফফন ও কালো শকুন কোনোটিই স্পেন সীমারেখার বাইরে খুব একটা যাচ্ছে না। এমনকি স্পেন পর্তুগালের সীমারেখা অঞ্চলের পরিবেশ জলবায়ুও একই রকম। তারপরও শকুনরা খাদ্যের খোঁজে পর্তুগালের দিকে এগোয় না।
২০০১ সালে স্পেনের এক মহামারী রোগে বিপুলসংখ্যক গবাদিপশু মারা যায়। স্পেন সরকার যত দ্রুত সম্ভব এসব মৃত জীব পুঁতে ফেলা বা পুড়িয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়। বলা হয়ে থাকে, এত সংখ্যক মৃত প্রাণীর কারণে এখনো স্পেনের শকুনদের সীমারেখার বাইরে যেতে দেখা যায় না।
দুই থেকে তিন বছর ধরে গবেষকরা ৬০টি গ্রিফফন ও ১১টি কালো শকুনের ওপর গবেষণা করার জন্য জিপিএস ট্র্যাকারস ব্যবহার করে দেখিয়েছেন যে তাঁরা খুব কমই পর্তুগালের দিকে এগোচ্ছে। দেখা যায়, গবেষণা চলার সময়েও মোট শকুনের মধ্যে মাত্র ১৩টিকে পর্তুগাল সীমান্তের ওপর দিয়ে উড়তে দেখা যায়। এমনিতেও পর্তুগালে শকুন জাতীয় পাখির সংখ্যা কম এবং তা দিন দিন কমে যাচ্ছে।