কী করে বানায় রং পেন্সিল?
রং পেন্সিলের সাথে আমাদের পরিচয় কখন হয় মনে করতে পারবে? খুব কঠিন, আমরা প্রায় সবাই লিখতে শেখার আগে আঁকতে শিখে যাই। তোমার ছোট ভাইবোন কিংবা অন্য কোনো শিশুকে দেখলেই ব্যাপারটা বুঝতে পারবে। দেখবে, এখনো বর্ণমালা লিখতে শেখেনি কিন্তু রং পেন্সিল নিয়ে দিব্যি খাতায়, বইয়ে, দেয়ালে, আয়নায় কিংবা যেখানে মন চাচ্ছে সেখানেই আঁকিবুঁকি করছে।বিশ্বাস করো, তুমি-আমি-আমরা সবাই কিন্তু ছোট থাকতে এমনটাই করেছি! রং পেন্সিল দিয়ে আঁকতে তো দারুণ মজা। জানতে ইচ্ছে করে না, কেমন করে তৈরি করা হয় আমাদের প্রিয় এই আঁকিবুঁকির উপকরণটি? চল দেখি বিষয়টা আসলে কেমন!
রং পেন্সিল তৈরি করার জন্য প্রথমে পেন্সিলের ভেতরে থাকা নিভ বা শিসটি তৈরি করা হয়। এটা বানানোর জন্য জ্বলন্ত চুলায় একটি পাত্রে পানি নিয়ে তাতে একে একে দিতে হয় বর্ণহীন বা রংছাড়া গাম/আঠা ও পরিমাণ মতো গুঁড়া মোম। এরপর যে রংয়ের শিস তৈরি করা হবে, সেই রংটা মেশানো হয়।পুরো মিশ্রণটাকে ভালোভাবে মিশে যাওয়ার জন্য সময় দিতে হয়। এরপর যতক্ষণ মিশ্রণটা শুকিয়ে শক্ত কাদামাটির মতো না হচ্ছে, ততক্ষণ এটাকে কিছু একটা দিয়ে ভালো মতো ঘাঁটতে হয়।
পুরো মিশ্রণটা শুকিয়ে শক্ত হয়ে গেলে একে ছোট ছোট টুকরা করে কাটা হয়।এরপর এই টুকরোগুলোকে অন্য একটি মেশিনে ঢোকানো হয়।এই মেশিনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে লম্বা শিস তৈরি করে। এবার পেন্সিলের মাপ অনুযায়ী শিসগুলো কেটে শুকাতে দেওয়া হয়। শুকানোর পর রাসায়নিক মেশানো রঙে আরো কিছুক্ষণ ডুবিয়ে রাখা হয়। এরপর শিস একদম কাঠের ভেতর ঢুকোনোর পালা।
এই প্রক্রিয়াটা খুবই মজার। প্রথমে এক প্রস্থ কাঠ খাঁজ কেটে তার ভেতর সিস ঢুকানো হয়, তার উপরে এরপর আরেক প্রস্থ খাঁজ কাটা কাঠ লাগানো হয় আঠা দিয়ে। এরপর মেশিনের সাহায্যে পেন্সিলগুলো কেটে আলাদা করে প্রথমে বার্নিশ করে তারপর বিভিন্ন রং করা হয়। পাশাপাশি পেন্সিলের গায়ে প্রিন্ট করে দেওয়া হয় পেন্সিল সম্পর্কে তথ্য ও নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের নাম, লোগো ইত্যাদি। ব্যস এই তো, এভাবেই তৈরি হয় আমাদের সবার প্রিয় রং পেন্সিল। এরপর শুধুই লাইব্রেরি থেকে কিনে মজা করে আঁকবার পালা।