শীতের সকালে পড়তে চাইছে না শিশু, যা করবেন
শীতের সকালে অনেক শিশুই বিছানা ছেড়ে উঠতে চায় না। আর যদি সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে পড়তে বসতে হয়, তখনই চেঁচামেচি, কান্নাকাটি শুরু হয়ে যায়। শীতের সকালে বাচ্চাকে পড়তে বসানো নিয়ে প্রায় অধিকাংশ বাড়ির চিত্র একই।
মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, শিশুর বয়স কত, তার উপরে নির্ভর করবে তার মনোযোগ। ৪-৫ বছরের শিশু ও ৮-১০ বছরের শিশুর মনোযোগ এক হবে না। তা তৈরি করতে হবে কিছু অভ্যাসের মাধ্যমে। তাহলেই শিশুর ঘুম থেকে উঠে পড়তে বসতে কোনো সমস্যাই হবে না।
এই বিষয়ে ভারতীয় মনোবিজ্ঞানী অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের মতে, সকালে ঘুম থেকে উঠিয়ে টানা দু’ঘণ্টা পড়তে বসালে সে বসবে না। সে ক্ষেত্রে প্রথম এক সপ্তাহে আধা ঘণ্টা তাকে পড়তে বসাতে হবে। ধীরে ধীরে সেই সময়সীমা বাড়াতে হবে।
সন্তান কিছুটা বড় না হওয়া পর্যন্ত পড়তে বসলে তার সামনে থাকুন। এমন একটা সময় তার পড়ার জন্য বরাদ্দ করতে হবে, যে সময়টাতে আপনি ওর পাশেই থাকতে পারবেন। পড়াশোনা যে আতঙ্ক নয়, তা বোঝাতে হবে বাচ্চাকে। পড়ার বিষয়গুলো গল্পের মতো করে বোঝান। লেখার অভ্যাস তৈরি করুন পাশে বসেই। ভাল করলে প্রশংসাও করুন। আপনাকে পাশে পেলে শিশুর পড়াশোনায় আগ্রহ তৈরি হবে।
মনোবিজ্ঞানীর মতে, শিশুকে একটানা পড়াবেন না। মাঝে বিরতি দিন। সেই সময়টাতে মোবাইল হাতে দেবেন না। বরং ছবি আঁকা অভ্যাস করান। গাছের পরিচর্যা করতে বলুন। বিরতির সময়টাতে এমন কাজ করাতে হবে যাতে শিশুর মন আনন্দে থাকে। তাহলেই তার মনোযোগ ও উদ্যম দুই-ই বাড়বে।
শিশুর ক্ষেত্রে ছবি ও ব্লকের সাহায্য নিন। পড়ার বিষয়টা ছবি এঁকে, প্রয়োজনে আলাদা আলাদা রং ব্যবহার করে বোঝান। পড়াশোনার ক্ষেত্রে ভিজ্যুয়াল কোনো দৃশ্যও খুব কাজে আসে। পড়ার বিষয়গুলোও তখন মজাদার হয়ে ওঠে।
শিশুর হোমওয়ার্ক হয়ে গেলে বিভিন্ন ধরনের ‘ব্রেন গেম’ খেলতে দিন। বিল্ডিং ব্লকস, পাজলস ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের খেলা আছে শিশুদের জন্য। স্মার্টফোনের বদলে এই ধরনের খেলা বা বই ওর হাতে তুলে দিলে মনোযোগ অনেকটাই বাড়বে। একঘেয়েমিও কাটবে।