স্বীকারোক্তিতে হত্যার বর্ণনা দিলেন হাফেজ জাকির হোসেন
কিশোরগঞ্জের চাঞ্চল্যকর গরু ব্যবসায়ী রমিজ উদ্দিন হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া মোয়াজ্জিন হাফেজ জাকির হোসেন আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক পার্থ ভদ্রের এজলাসে আসামি জাকির হোসেন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জবানবন্দির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি (অপারেশনস) মোখলেছুর রহমান। পরে বিচারক আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
গ্রেপ্তারকৃত জাকির হোসেন নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার লেঙ্গুরা ঝিগাতলা গ্রামের বাসিন্দা।
এর আগে গত মঙ্গলবার রাতে লক্ষ্মীপুরের রামগতি এলাকার একটি মসজিদ থেকে তাবলিগ জামাতের চিল্লারত অবস্থায় হাফেজ জাকির হোসেনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব।
গত ৩ অক্টোবর রাতে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার লতিবাবাদ ইউনিয়নের কাটবাড়িয়া ডাউকিয়া মসজিদের পাশে নরসিংদীর গরু ব্যবসায়ী রমিজ উদ্দিনকে (৬৫) হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে জাকির। এ হত্যার ঘটনায় রমিজ উদ্দিনের ছেলে আব্দুস সালাম বাদী হয়ে জাকির হোসেনকে আসামি করে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মামলা ও র্যাব সূত্রে জানা যায়, গত পাঁচ বছর ধরে নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলার একটি গ্রামের মসজিদে মুয়াজ্জিন হিসেবে কাজ করে আসছেন জাকির। সেখানে থাকার সুবাদে বিদেশফেরত স্থানীয় গরু ব্যবসায়ী রমিজ উদ্দিনের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে উঠে। হত্যার ১০ থেকে ১২ দিন আগে সস্তায় গরু কিনে দেওয়ার প্রলোভনে তিনি রমিজ উদ্দিনকে নেত্রকোনা জেলায় গরু কেনাবেচার স্থানে নিয়ে যান। পরবর্তীতে জাকিরের কথায় বিশ্বাস করে রমিজ ৩০ সেপ্টেম্বর ব্যাংক থেকে ছয় লাখ টাকা তোলেন। ঘটনার দিন জাকির কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার কাটাবাড়িয়া ডাউকিয়া মসজিদ এলাকায় নিয়ে যান এবং অপেক্ষা করতে বলেন। রাত দেড়টার দিকে রমিজ উদ্দিনকে কৌশলে ওই এলাকার ডাউকিয়া মসজিদের দক্ষিণ পাশে কলাবাগানে নিয়ে যান। তারপর রমিজ উদ্দিনের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে জোরে আঘাত করেন। হাতুড়ির আঘাতে রমিজ উদ্দিন মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার কপালে, মুখে, বাম চোখের ওপর ও নিচে এবং মাথার বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি রমিজ উদ্দিনের মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যান। পরে ঢাকা থেকে তাবলিগ জামাতের ১২০ দিনের চিল্লায় যোগ দেন।