চীন শুধু ‘অর্থের ঝুড়ি’ নয় ‘সাশ্রয়ী’ প্রস্তাবও দেয় : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, “বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান অবকাঠামোর প্রয়োজনের মধ্যে চীন ‘আকর্ষণীয় ও সাশ্রয়ী মূল্যের’ প্রস্তাবের সঙ্গে ‘অর্থের ঝুড়ি’ নিয়ে এগিয়ে এসেছে।”
তবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর ‘অবহিত সিদ্ধান্ত’ নেওয়ার ওপর জোর দিয়েছেন এবং এই অঞ্চলের কিছু দেশে তারা যে সমস্যা দেখেছেন, তা উল্লেখ করেছেন।
শনিবার মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন-২০২২ এর দ্বিতীয় দিনে ‘এ সি চেঞ্জ : রিজিওনাল অর্ডার অ্যান্ড সিকিউরিটি ইন দ্য ইন্দো-প্যাসিফিক’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনায় অংশ নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ড. মোমেন বলেন, “অর্থনৈতিক উন্নয়নের দিক থেকে বাংলাদেশ ‘বেশ ভালো’ করছে এবং এজন্য সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষাও বেড়েছে। দেশে আরও অবকাঠামোগত সুবিধার চাহিদা রয়েছে। কিন্তু আমাদের কাছে টাকা নেই। আমাদের প্রযুক্তিও নেই।”
এ সময় ড. মোমেন জাপানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘তারা (জাপান) অন্যতম ভালো বন্ধু এবং দেশটি বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগ করছে।’
এ ছাড়াও বিভিন্ন প্রকল্পে বাংলাদেশকে ভারত লাইন অব ক্রেডিট দিচ্ছে উল্লেখ করে ভারতকে ধন্যবাদ জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের আরও অবকাঠামোগত উন্নয়নের চাহিদা রয়েছে। এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে উন্নয়ন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সেখানে আমাদের পূর্ণতা দেওয়া প্রয়োজন। আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে আরও তহবিল প্রয়োজন।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে সর্বোচ্চ ঋণ নিয়েছে।’
ড. মোমেনের প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জয়শঙ্কর বলেন, “আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ‘প্রতিযোগিতামূলক’ এবং প্রতিটি দেশই সুযোগ খুঁজবে এবং কী করতে পারবে তা দেখবে। কিন্তু সেটি করার সময় তাদের নিজের স্বার্থে বিচক্ষণ হওয়া এবং কী পাচ্ছে সে সম্পর্কে জানা উচিত। আমরা এখন দেখতে পাচ্ছি আমাদের অঞ্চলসহ বিভিন্ন দেশ বৃহৎ ঋণে জর্জরিত। আমরা দেখতে পাচ্ছি এমন প্রকল্প যা বাণিজ্যিকভাবে টেকসই না; বিমানবন্দর যেখানে বিমান আসে না; বন্দর যেখানে জাহাজ আসে না। আমি মনে করি মানুষ আরও বিবেচক হবে এবং নিজেদের জিজ্ঞেস করবে আমি কী পাচ্ছি।’
ড. জয়শঙ্কর বলেন, ‘আমি মনে করি, অবহিত সিদ্ধান্ত নেওয়া আমাদের সবার জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে অবশ্যই তা খুবই প্রতিযোগিতামূলক সিদ্ধান্ত হবে।’
৫৮তম মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলন আজ রোববারই শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।