ফরিদপুরে ব্যাংক থেকে চুরি যাওয়া টাকা উদ্ধার, আটক ২
ফরিদপুরে সোনালী ব্যাংকের কোর্ট বিল্ডিং শাখা থেকে চুরি যাওয়া ২০ লাখ টাকার মধ্য থেকে ১৩ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে সন্দেহভাজন দুজনকে আটক করা হয়েছে।
ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আজ বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা।
পুলিশ কর্মকর্তা জামাল পাশা বলেন, ‘গত ৬ ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর পোস্ট অফিস থেকে নজরুল ইসলাম (৪২) তাঁর বাবার পেনশনের ২০ লাখ টাকা উত্তোলন করে সোনালী ব্যাংক কোর্ট বিল্ডিং শাখায় সঞ্চয়পত্রে জমা রাখার উদ্দেশে ব্যবস্থাপকের কক্ষে ঢুকে সোফার ওপর টাকার ব্যাগটি রাখেন। টাকা জমা নেওয়ার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলতে বললে তিনি কথা বলার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ডেস্কে যান। এই ফাঁকে মাত্র এক মিনিটের মধ্যে চোরেরা ২০ লাখ টাকার ব্যাগটি চুরি করে নিয়ে দ্রুত ব্যাংক ছেড়ে যায়। এ ঘটনার পরদিন ৭ ফেব্রুয়ারি কোতোয়ালি থানায় মামলা করা হয়। মামলা নম্বর-১৯।’
কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম হাসানকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
পুলিশ কর্মকর্তা জামাল পাশা জানান, এসআই শামীম হাসান ঘটনাস্থল ও আশপাশের ভিডিওফুটেজ পর্যালোচনা করে এবং আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তিন জন আসামিকে শনাক্ত করতে সক্ষম হন। গত ১৫ মার্চ ভোর ৫টায় আসামি মো. ফারুক শেখকে (৬০) খুলনার হরিণটানা থানার হোগলডাঙ্গা গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে হরিণটানা থানা পুলিশ। এ সময় আসামির কাছে চুরি যাওয়া তিন লাখ টাকা মেলে। ফারুকের স্বীকারোক্তি মতে ও তথ্যপ্রযু্ক্তির সহায়তায় অপর আসামি মোহাম্মদ আলীকে (৪৫) মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় তার শশুরবাড়ি কোলা গ্রাম থেকে একই তারিখ বেলা ১১টার দিকে গ্রেপ্তার করা হয়। মোহাম্মদ আলীর স্বীকারোক্তি ও দেখানো পথে আরও পাঁচ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে দুজন আসামির দেওয়া তথ্য মতে, বরিশাল জেলার আগৈলঝাড়া থানার উত্তর চাঁদসি এলাকায় অভিযান চালানো হলে আসামি বাসা থেকে পালিয়ে যায়। ওই বাসা থেকে চুরি যাওয়া আরও পাঁচ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ জানায়, আসামিরা প্রায় ১৭ বছর ধরে এই চুরির পেশায় জড়িত। তারা ঢাকা, গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় চুরি করে থাকে। মূলত আসামিরা সরকারি পোস্ট অফিস, ব্যাংকে বয়স্ক লোকদের টার্গেট করে থাকে। আসামিদের বিরুদ্ধে একই ধরনের অপরাধের অভিযোগে গাইবান্ধাসহ বিভিন্ন জেলায় একাধিক মামলা রয়েছে। আসামি ফারুকের বিরুদ্ধে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা নং-১১, তারিখ- ১৪ ডিসেম্বর, ২০০৬; জি আর নং-৩৩৬, ধারা- ৩৭৯/৪১১ পেনাল কোড-১৮৬০ রয়েছে। তাদেরকে আজ আদালতে পাঠানো হয়। মামলার বাদী মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের বাড়ি ফরিদপুর সদরের বিল মামুদপুর গ্রামে।