মানবতাবিরোধী অপরাধ : খালেক মণ্ডল ও রোকনুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড
মুক্তিযুদ্ধের সময় সাতক্ষীরা এলাকায় হত্যা ও ধর্ষণের মতো মানবতাবিরোধী অপরাধে আব্দুল খালেক মণ্ডল ও খান রোকনুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আজ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন। জামায়াতের নেতা আব্দুল খালেক মণ্ডল সাবেক সংসদ সদস্য ছিলেন। রায়ের সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় আব্দুল খালেক মণ্ডল ও খান রোকনুজ্জামান সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় যেসব যুদ্ধাপরাধ ঘটিয়েছেন, তা উঠে এসেছে এ মামলার বিচারে। একাত্তরে খালেক মণ্ডল ছিলেন সাতক্ষীরায় রাজকার বাহিনীর সংগঠক, আর পলাতক রোকনুজ্জামান ছিলেন ওই বাহিনীর সদস্য।
দুই আসামির বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মোট ছয়টি ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছিল প্রসিকিউশন। এর সবগুলোই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে বলে রায়ে জানিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। এ মামলার মোট চার আসামির মধ্যে আব্দুল্লাহ আল বাকী ও জহিরুল ইসলাম ওরফে টিক্কা খান বিচারাধীন অবস্থায় মারা যান।
জানা গেছে, মুক্তিযুদ্ধের সময় পাঁচ ব্যক্তিকে জবাই ও বেয়োনেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যার অভিযোগে সাতক্ষীরা সদর আসনে জামায়াতের সাবেক সাংসদ আব্দুল খালেক মণ্ডলসহ নয় জনের বিরুদ্ধে ২০০৯ সালের ২ জুলাই মামলা হয়। মামলা করেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার শিমুলবাড়িয়া গ্রামের শহীদ রুস্তম আলী গাজীর ছেলে নজরুল ইসলাম গাজী; পরে মামলাটি আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়।
২০১৫ সালের ১৬ জুন ভোরে সাতক্ষীরা সদর উপজেলার খলিলনগর মহিলা মাদ্রাসায় বৈঠকের সময় জামায়াত নেতা খালেক মণ্ডলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শহীদ মোস্তফা গাজী হত্যা মামলায় সাবেক এ জনপ্রতিনিধিকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
এরপর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা যুদ্ধাপরাধীদের বিষয়ে জানতে ২০১৫ সালের ৭ অগাস্ট তদন্তে নামে। এ তদন্ত চলে ২০১৭ সালে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তদন্ত শেষের দুদিন দিন পর ৮ ফেব্রুয়ারি খালেক মণ্ডল, রোকনুজ্জামান, আব্দুল্লাহ আল বাকী এবং জহিরুল ইসলাম ওরফে টিক্কার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দেয় ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। সেখানে মোট ৩৩ জনকে সাক্ষী করা হয়েছিল, যাদের মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্য শুনেছে ট্রাইব্যুনাল।