গাজীপুরে বকেয়া বেতন ও বন্ধ কারখানা খোলার দাবিতে বিক্ষোভ
গাজীপুরে বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাস পরিশোধ ও বন্ধ কারখানা খোলার দাবিতে পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ করেছেন। এ সময় তাঁরা কারখানার পাশে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন। বিক্ষোভ থেকে ইটপাটকেল ছোড়ার ঘটনা ঘেট।
আজ বুধবার সকালে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি এলাকার এনটিকেসি পোশাক কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
পরে পুলিশ এসে টিয়ার গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
আন্দোলনরত শ্রমিক ও স্থানীয়রা জানান, গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি এলাকার এনটিকেসি পোশাক কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের গত এপ্রিল মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধ না করেই ঈদুল ফিতরের আগে ২৮ এপ্রিল হঠাৎ কারখানা বন্ধ করে দেয়। ঈদের পর এ পর্যন্ত কারখানাটি চালু এবং শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধ করা হয়নি।
বিক্ষোভকারীরা আরও জানান, শ্রমিকরা কাজে যোগ দিতে এবং তাঁদের পাওনাদির জন্য প্রায় প্রতিদিনই কারখানার গেটে যান। কিন্তু, কাউকে না পেয়ে ফিরে যান। কারখানা কর্তৃপক্ষ একাধিকবার আশ্বাস দিয়েও শ্রমিকদের পাওনাদি পরিশোধ করেনি।
আজ ছিল শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন (এপ্রিল মাস) ও ঈদ বোনাস পরিশোধের নির্ধারিত তারিখ।
কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সকালে শ্রমিকরা বন্ধ কারখানার সামনে এসে অবস্থান নেন। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পর মালিক পক্ষের কাউকে না পেয়ে শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। শ্রমিকরা তাঁদের পাওনা এপ্রিল মাসের বকেয়া বেতন, ঈদ বোনাস পরিশোধ ও বন্ধ কারখানা খোলার দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেন।
জিএমপির কোনাবাড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু সিদ্দিক জানান, আন্দোলনরত শ্রমিকরা কর্তৃপক্ষের সাড়া না পেয়ে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কারখানা থেকে বের হয়ে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এ সময় শ্রমিকরা পাশের কয়েকটি কারখানা ও গাড়িকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়েন। এতে ওই মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। মহাসড়কের উভয় দিকে যানবাহন আটকা পড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়।
ওসি আরও জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশ সদস্যরা আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধানের কথা বলে অবরোধকারী শ্রমিকদের বুঝিয়ে মহাসড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করেও ইটপাটকেল ছোড়ে। এতে পুলিশের কয়েক সদস্য আহত হন।
একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং দুই রাউন্ড টিয়ার গ্যাসের শেল ও তিন রাউন্ড সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
কারখানার জেনারেল ম্যানেজার বুলবুল আহমেদ জানান, মালিকপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে। আগামী ৫ জুন শ্রমিকদের পাওনা বেতন ও ঈদ বোনাস পরিশোধ করা হবে।