বৃদ্ধা মাকে রাস্তার পাশে ফেলে গেল ‘ছেলে ও পুত্রবধূ’
বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশ থেকে মাজেদা বেগম মর্জিনা (৭০) নামের এক নারীকে উদ্ধার করা হয়েছে।
গত সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার বাটাজোর এলাকায় ওই বৃদ্ধাকে ফেলে রাখা হয়। অচেতন অবস্থায় উদ্ধারের পর ওই বৃদ্ধাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন স্থানীয়রা।
বাটাজোর বাংলালিংক টাওয়ারের পাহারাদার আ. করিম জানান, ওই বৃদ্ধাকে অচেতন অবস্থায় সোমবার সন্ধ্যায় টাওয়ারের কাছে মহাসড়কের পাশে পেয়ে স্থানীয়রা প্রথমে তাঁদের কাছে রেখে যান। তাঁদের সেবাযত্নে বৃদ্ধা কিছুটা সুস্থ হন। পরে সোমবার দিনগত রাত পৌনে ১টার দিকে তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
হাসপাতালে জ্ঞান ফেরার পর ওই বৃদ্ধা নিজেকে মাজেদা বেগম বলে পরিচয় দেন। তাঁর স্বামীর নাম চাঁন মিয়া মৃধা এবং ছেলের নাম শাহে আলম মৃধা। তাঁর বাড়ি পটুয়াখালীর দশমিনার নলখোলা গ্রামে। পুত্র ও পুত্রবধূ তাঁকে ডাক্তার দেখানোর নাম করে ওই স্থানে রেখে চলে গেছে বলে মাজেদা বেগম জানান।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ের কর্মচারী শিপন হাওলাদার বলেন, সোমবার সন্ধ্যার কোনো এক সময় ওই বৃদ্ধাকে রাস্তার পাশে বসিয়ে রেখে কৌশলে পালিয়ে যান তাঁর ছেলের বউ। পরে বৃষ্টিতে ভিজে মাজেদা বেগম অসুস্থ হয়ে পড়েন।
শিপন বলেন, ‘সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বৃদ্ধার খবরটি দেখতে পাই।’ এরপর উপজেলা তথ্যসেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তা সরোয়ার হোসেনসহ কয়েক জন যুবককে নিয়ে অসুস্থ অবস্থায় বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করেন তাঁরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. তৌকির আহম্মেদ জানান, বৃদ্ধার শরীর খুবই দুর্বল। গায়ে সামান্য জ্বরও রয়েছে। তাঁকে সাধ্যমতো চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘বিষয়টি খুবই অমানবিক ও হৃদয়বিদারক। আমরা প্রথমে বৃদ্ধা মায়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। একই সঙ্গে তাঁর সঙ্গে যারা অমানবিক আচরণ করেছে, তাদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে।’