দাবি না মানলে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার হুমকি রনির
প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস পাওয়ার আগ পর্যন্ত রেলে অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে ৬ দফা দাবি আদায়ের আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন মহিউদ্দিন রনি। আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়াতে নানা ষড়যন্ত্র হচ্ছে ও অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। একইসঙ্গে তাঁর দাবি মানা না হলে আন্দোলনের স্থানেই গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহননের হুমকি দিয়েছেন।
এদিকে, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অনেকেই এসে রনির আন্দোলন ও দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করছেন। রনির ব্যতিক্রমী প্রতিবাদ কর্মসূচির সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে তাঁরা দেশের প্রতি নিজেদের দায়িত্বের বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন।
রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা নিয়ে টানা ১৭ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনলাইনে রেলটিকেট হয়রানির শিকার মহিউদ্দিন রনি। কখনো প্লার্কড হাতে, কখনো বা হাতে শিকল পরে প্রতিবাদ জানান তিনি।
রেলওয়ের অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে শনিবার কমলাপুর রেলস্টেশনে প্রতিবাদী গানের কর্মসূচি পালন করেন মহিউদ্দিন রনি। সেখানে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে মিলেছেন অনেকে। গাইছেন দেশাত্মবোধক গান, অধিকার আদায়ের গান।
রনি জানিয়েছেন, তাঁর আন্দোলন রেলের দুর্নীতির বিরুদ্ধে। এই আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কিংবা সরকারবিরোধী আন্দোলন নয়।
কয়েকদিন আগে গণমাধ্যমের এক সাক্ষাৎকারে রনি দাবি করেছিলেন, তাঁকে সেখান থেকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এ সময় তাঁর এই আন্দোলনকে সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ড বলে আখ্যা দেওয়া হয়। পাশাপাশি ‘ওপর থেকে চাপ আছে’ বলে তাঁকে জানান পুলিশের কর্মকর্তারা। তবে, তিনি সেই পুলিশ কর্মকর্তার নাম জানাননি।
রনি বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত আমার দেওয়া ছয় দফা ও আমাদের ওপর হামলার বিচার না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা শাহবাগে অবস্থান করব।’ দাবি মানা না হলে তিনি শেষ পর্যন্ত আত্মহননের পথ বেছে নেবেন বলে জানান।
রনির ছয় দফা
রেলের সমস্যা সমাধানে রনির ছয় দফার মধ্যে রয়েছে—
১. টিকেট ব্যবস্থাপনায় সহজ ডটকমের হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে; হয়রানির ঘটনায় তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
২. যথোপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধ করতে হবে।
৩. অনলাইনে কোটায় টিকেট ব্লক করা বা বুক করা বন্ধ করতে হবে। সেই সাথে অনলাইন-অফলাইনে টিকেট কেনার ক্ষেত্রে সর্বসাধারণের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।
৪. যাত্রী চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
৫. ট্রেনের টিকেট পরীক্ষক ও তত্ত্বাবধায়কসহ অন্যান্য দায়িত্বশীলদের কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিক মনিটর, শক্তিশালী তথ্য সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেল সেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে।
৬. ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিনামূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।