চট্টগ্রামে গণপরিবহণ সংকটে দুর্ভোগ চরমে
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে চট্টগ্রামের রাস্তায় নামছে না বেশিরভাগ গণপরিবহণ। শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পরিবহণ মালিক গ্রুপের আওতাধীন গণপরিবহণ চলাচল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করলেও গণপরিবহণ রাস্তায় নামেনি। এদিকে চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহণ মালিক গ্রুপ করণীয় নির্ধারণে সংগঠনের সভাকক্ষে সভা করছেন।
তেলের দাম কমানোর দাবি জানিয়ে চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহণ মালিক গ্রুপের সভাপতি খোরশেদ আলম জানান, বিকেল ৫টায় বিআরটিএ নতুন ভাড়া নির্ধারণ করবে। তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নেব।
এদিকে মেট্রোপলিটন পরিবহণ মালিক গ্রুপের সভাপতি বেলায়েত হোসেন বেলাল জানান, বিআরটিএর অনুরোধে তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন।
সকাল থেকে যারাই নগরীতে গণপরিবহণ নিয়ে সড়কে বের হয়েছে, তাদের বাধা দিয়েছে বেশ কয়েকটি সংগঠনের কর্মীরা। যদিও এসব উচ্ছৃঙ্খল কর্মীরা নিজেদের শ্রমিক নয় বলে জানিয়েছে সংগঠনের নেতারা।
চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহণ মালিক গ্রুপের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহাজান জানান, জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে কিন্তু ভাড়া তো বাড়েনি। এই অবস্থায় ভাড়া না বাড়ালে গাড়ির খরচ-বেতন চালানো সম্ভব হবে না। তাই ভাড়া পুনঃনির্ধারণ করতে হবে।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মনজু জানান, রাত থেকে পেট্রল পাম্পগুলোতে কাঙ্খিত তেল পাওয়া যায়নি। অনেক যানবাহন দুপুর পর্যন্ত তেল শূন্য ছিল। তাই সকাল থেকে গণপরিবহণ চলাচলে সমস্যা হয়েছে। তবে আমরা গাড়ি বন্ধ করিনি। মালিক-শ্রমিকরা নিজেরাই গাড়ি চালাচ্ছে না। সরকার যত দ্রুত ব্যবস্থা নিবে সমস্যা ততো তাড়াতাড়ি কেটে যাবে।
অলংকার মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় গণপরিবহণ না পেয়ে মানুষকে ট্রাকে করে গন্তব্যে যেতে দেখা যায়।
চিকিৎসক মো. কামরুজ্জামান জানান, তার এক সহকর্মী ঢাকার গাড়ি ধরতে এসে না পেয়ে আবার বাসায় চলে যাচ্ছেন। একইভাবে বেসরকারি কর্মজীবীরা গণপরিবহণ না পেয়ে হেঁটে কর্মস্থলে যেতে বেগ পেতে হয়েছে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল স্টেশন মাস্টার নিয়োগ পরীক্ষার্থী জোবেদা ইসলাম জানান, পরীক্ষায় অংশ নিতে হেঁটে কেন্দ্রে যেতে হয়েছে।
প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা কামরুল হাসান জানান, নগরীতে গণপরিবহণ বন্ধের কারণে তাদের পূর্ব নির্ধারিত পরীক্ষা একটু দেরিতে গ্রহণ করতে হয়েছে। অনেক পরীক্ষার্থী সময়মতো পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌছাতে পারেনি।
এদিকে গণপরিবহণ সংকটে সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছে সড়কে নামা মানুষ। মাঝ রাস্তায় গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়ায় ভোগান্তি আরও চরমে উঠেছে। সকাল থেকে অফিসগামী ও কর্মজীবীরা গণপরিবহণ না পেয়ে দুর্ভোগে পড়েছেন। রিকশা, টেম্পো ও মোটরসাইকেল ভাড়া নিয়ে যেতে হচ্ছে গন্তব্যে। তবে পণ্য পরিবহণ চলাচল এখনও স্বাভাবিক আছে।