প্রথম দফায় অস্ত্রের মুখে, পরের বার স্বামীকে বেঁধে ধর্ষণ
প্রথমবার ধর্ষণ করা হয় হত্যার হুমকি দিয়ে, অস্ত্রের মুখে। এরপর স্থানীয় মুরব্বিদের উপস্থিতিতে সালিশ বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, একজন সংসদ সদস্যকে নিয়ে ধর্ষকের বিচার করা হবে। কিন্তু এতেও দমেননি ওই ধর্ষক। কয়েক দিন পর বাড়িতে ঢুকে স্বামীর হাত-পা বেঁধে আবারও ধর্ষণ করা হয়।
নির্মম এ ঘটনা ঘটেছে হবিগঞ্জের বানিয়াচঙ্গে। ধর্ষকের নাম মনু মিয়া। আজ বৃহস্পতিবার ভোরে মাধবপুর উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেছে বানিয়াচঙ্গ থানা পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা করেছেন ধর্ষণের শিকার নারী নিজে বাদী হয়ে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, ওই নারীকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করতেন মনু মিয়া। রাস্তায় একা পেলেই চলত হয়রানি। একপর্যায়ে ওই নারীকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন তিনি।
এজাহারে আরো বলা হয়েছে, গত ১৪ জানুয়ারি ওই নারীর স্বামী গ্রামের পৌষসংক্রান্তির মেলায় যান। এ সুযোগে রাতে মনু মিয়া ঘরে ঢুকে অস্ত্রের মুখে হত্যার হুমকি দিয়ে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন। পরের দিন ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে মুরুব্বিরা গ্রামপুলিশের সহায়তায় মনু মিয়াকে আটক করে। তাৎক্ষণিক সালিশ বৈঠকে মনু মিয়া ধর্ষণের কথা স্বীকার করেন।
একই সঙ্গে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খানের উপস্থিতিতে এ ঘটনার বিচার করা হবে। এ সিদ্ধান্তের পর মনু মিয়াকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
মামলার এজাহারে আরো বলা হয়েছে, এর মধ্যে গত ১৭ জানুয়ারি রাতে মনু মিয়া তাঁর এক সহযোগীকে নিয়ে ঘরের সিঁধ কেটে ভেতরে ঢোকেন এবং স্বামীর হাত-পা দড়ি দিয়ে বেঁধে ফেলেন। এ সময় তাঁরা দেশীয় অস্ত্রের মুখে স্বামীর সামনেই ওই নারীকে দ্বিতীয় বারের মতো ধর্ষণ করেন। পরে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাঁকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে বানিয়াচঙ্গ থানায় মনু মিয়া ও তাঁর সহযোগীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।
বানিয়াচঙ্গ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নির্মলেন্দু চক্রবর্তী জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আজ ভোরে ভারত সীমান্তবর্তী মুগলপুর গ্রাম থেকে মনু মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ওসি আরো জানান, মনু মিয়া মুগলপুর গ্রামে দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। তাঁর শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে তিনি আশ্রয় নিয়েছিলেন।
জেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে মনু মিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।