সরকারি জমি বন্দোবস্ত নিয়ে প্লট আকারে বিক্রির অভিযোগ
সরকারি খাস খতিয়ানের ৭০ শতাংশ জমি একসনা বন্দোবস্ত নিয়ে দোকানঘর নির্মাণ করে তা বিক্রি করা হচ্ছে—এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ বলছে, নড়াইল সদর ও যশোরের অভয়নগর উপজেলার সীমান্তবর্তী চাকই বাজারে ঘটছে এমন ঘটনা। এরই মধ্যে ২৩টি প্লট করে চলছে পজিশন বিক্রি। প্রতিটি পজিশন বিক্রি করে নেওয়া হয়েছে চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা।
সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, নড়াইল সদর-অভয়নগর উপজেলার সীমান্তবর্তী সড়কের দুই পাশেই চাকই বাজার। সদর উপজেলার বিছালী ইউনিয়ন এবং অভনগর উপজেলার বাগুটিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দারা এই বাজারে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসাবাণিজ্য করে আসছে।
দুটি ইউনিয়নের ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাজারটি সরকারের খাস খতিয়ানভুক্ত। সেখানে রাস্তার দুই পাশের গাছপালা কেটে পাকা দোকানঘর নির্মাণ করা হচ্ছে।
সরকারি জমি প্লট করে পজিশন বিক্রি করার ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন যশোরের অভয়নগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. কামরুজ্জামান।
মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘শুধু জমি বিক্রি নয়, এখানকার গাছপালাও কেটে বিক্রি করা হয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় চার থেকে পাঁচ লাখ টাকা।’
এক প্রশ্নের উত্তরে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘একসনা বন্দোবস্তের জমি বিক্রি বা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারের জন্য নয়, শুধু বসবাসের জন্য দেওয়া হয়। যারা দোকানঘরের জন্য টাকা দিয়েছে, তারা আমার কাছে লিখিত দিয়েছে। এ ব্যাপারে জমি বন্দোবস্ত গ্রহণকারীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, বাগুটিয়া ইউনিয়নের কোদলা গ্রামের স্বপন কুমার রায় ভবানীপুর মৌজার ৬১ নম্বর খতিয়ানের ৩৯, ৪২, ৪৩ আরএস দাগের ৭০ শতাংশ জমি ১৫ হাজার ২৫০ টাকা সরকারের ঘরে জমা দিয়ে একসনা বন্দোবস্ত নেন। বন্দোবস্ত নেওয়া ওই জমি তার ভাই সৌমিত্র রায় দেখভাল করেন। সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে সৌমিত্র রায় বন্দোবস্ত নেওয়া জমির ওপর থেকে মূল্যবান গাছপালা কেটে বিক্রি করে দেন। সেখানে ২৩টি পাকা দোকানঘর নির্মাণ করে পজিশন বিক্রি করছেন।
বাগুটিয়া ইউনিয়নের চাকই গ্রামের মো. মুনছুর মোল্লা এবং নাজমুল শেখ বলেন, স্বপন বাবুর ভাই সৌমিত্র বিশ্বাসের কাছে লাখ টাকা অগ্রিম জমা দিয়ে দোকানঘর বন্দোবস্ত নিয়েছেন। বিছালী ইউনিয়নের আড়পাড়া গ্রামের আমিরুল ইসলাম, মির্জাপুর গ্রামের সোহাগ গাজী, সুজন কাজ, রুখালি গ্রামের আবু সামাদ বলেন, আমরা সৌমিত্রের কাছে পাঁচ লাখ টাকা অগ্রিম দিয়েছি।
চাকই বাজার বণিক সমিতির সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। কবে, কারা ঘর তুলছে, জানি না। বাজারের প্রায় সব জমিই খাস।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সৌমিত্র বিশ্বাস বলেন, ‘আমার দাদা স্বপন কুমার রায় টাকা জমা দিয়ে ৭০ শতাংশ সরকারি জমি একসনা বন্দোবস্ত নিয়েছেন। সেই জমিতে ২২-২৩টি দোকানঘর নির্মাণ করছি। আমি নিয়ম মেনেই ঘর নির্মাণ করছি।’