প্রধান শিক্ষক আত্মহত্যার ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাশারের আত্মহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় কৈখালি ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শেখ আব্দুর রহিমসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল শনিবার (৭ জানুয়ারি) রাত ৮টায় তাদের ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে গ্রেপ্তার করে আজ রোববার শ্যামনগর থানায় সোপর্দ করা হয়।
গ্রেপ্তার অন্যরা হলেন—শ্যামনগর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের আলী মোর্তুজা, এস আর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. সালাহউদ্দিন, সামাজিক বিজ্ঞানের শিক্ষক আব্দুল মান্নান, শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক আব্দুল মজিদ ও জাকির গাজী।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, গত বছর অফিস সহায়ক, আয়া, নৈশপ্রহরী ও ল্যাবসহকারী পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেন প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার। আবেদনবিধি অনুযায়ী না হওয়ায় আয়া পদে এক প্রার্থীর আবেদন বাতিল করে নিয়োগ বোর্ড। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে অন্য আসামিদের সহযোগিতায় ওই নারী প্রধান শিক্ষক আবুল বাশারের নামে মিথ্যা ধর্ষণচেষ্টা ও টাকা আত্মসাতের মামলা করেন। এরপর বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম বিষয়টি নিয়ে প্রধান শিক্ষককে হয়রানি করা শুরু করেন।
চেয়ারম্যান আব্দুর রহিমসহ শিক্ষক আব্দুল মজিদ, শিক্ষক সালাহউদ্দিন, আব্দুল মান্নান, মারুফা খাতুন, আলী মোর্তুজা ও জাকির হোসেন প্রধান শিক্ষকের কাছে ৫০ লাখ টাকা দাবি করেন। প্রধান শিক্ষক তাদের পাঁচ লাখ টাকাও দেন। বাকি ৪৫ লাখ টাকার জন্য আলী মোর্তুজাসহ অন্যারা প্রধান শিক্ষককে অনবরত চাপ ও হুমকি দিতে থাকেন। এতে মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে প্রধান শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কাছে ছুটি চান। সভাপতি তা মঞ্জুর না করে গত ২ জানুয়ারি প্রধান শিক্ষককে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেন। এতে প্রধান শিক্ষক মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে গত বুধবার (৪ জানুয়ারি) আত্মহত্যা করেন।
সাতক্ষীরাস্থ র্যাব-৬-এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর গালিব জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার রাত ৮টার দিকে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে ওই ছয় আসামিকে আটক করা হয়। আজ সকালে তাদের শ্যামনগর থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
শ্যামনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বাদল জানান, এসআর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল বাশার আত্মহত্যার ঘটনায় তাঁর স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলা করেছেন। গতকাল ওই ছয় আসামিকে র্যাব গ্রেপ্তার করে থানায় পাঠিয়েছে। তাদের জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।