আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে ইজতেমা অভিমুখে মানুষের স্রোত
তাবলিগ জামায়াতের ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের স্রোত বয়ে চলেছে টঙ্গী অভিমুখে। আজ রোববার (১৫ জানুয়ারি) ঢাকার অদূরে টঙ্গীর তুরাগ তীরে আয়োজিত বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের শেষ দিন আজ। রোববার (১৫ জানুয়ারি) জোহর নামাজের আগে যেকোনো সময়ে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে বলে ইজতেমা আয়োজক সূত্রে জানা গেছে।
এর আগে আজ সকাল থেকে শুরু হয় হেদায়েতি বয়ান। সমবেত মুসল্লিদের সঙ্গে মুনাজাতে অংশ নিয়ে মহান আল্লাহর দরবারে নিজেদের কৃত অপরাধের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা ও তাঁর নৈকট্য লাভের আশায় দলেদলে যোগ দিচ্ছেন মুসল্লিরা। সকাল থেকেই বাসে, ট্রেনে ও অন্যান্য যানবাহনে করে যেতে দেখা যাচ্ছে মানুষদের। রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, এবারে বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে পাঁচটি স্পেশাল ট্রেন পরিচালনা করবে বাংলাদেশ রেলওয়ে। সেই সঙ্গে আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া ও ঢাকায় প্রবেশের সময় সব ট্রেন টঙ্গী রেলস্টেশনে থামবে।
এছাড়া আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে ‘মোনাজাত স্পেশাল’ নামের বিশেষ ট্রেন পরিচালিত হবে। যা রোববার সকাল ১০টা থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে টঙ্গীর উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে। কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে টঙ্গীর উদ্দেশে প্রথম ট্রেন ছেড়ে যাবে ভোর ৫টা ৩০ মিনিটে, দ্বিতীয় ট্রেন ছাড়বে সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে, তৃতীয় ট্রেন ছাড়বে ৭টা ৩০ মিনিটে, চতুর্থ ট্রেন ছাড়বে ৯টায় এবং পঞ্চম ট্রেন ছাড়বে সকাল ১০টায়। গত দুদিন টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে লাখ-লাখ মুসল্লির উদ্দেশে চলে পবিত্র কুরআন হাদিসের আলোকে গুরুত্বপূর্ণ বয়ান।
এদিকে, ইজতেমার এ পর্বে শিল্পনগরী টঙ্গী ইতোমধ্যেই ধর্মীয় নগরীতে পরিণত হয়েছে। মহান আল্লাহ তায়ালার নৈকট্য লাভের ব্যাকুলতায় দ্বীনের দাওয়াতে মেহনত করার জন্য ইসলামের মর্মবাণী সর্বত্র পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা দলে দলে ছুটে আসেন টঙ্গীর তুরাগতীরে। ইজতেমায় মূল বয়ান উর্দুতে হলেও অংশ নেওয়া বিভিন্ন ভাষাভাষী মুসল্লিদের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে বাংলা, ইংরেজি, আরবি, তামিল, মালয়, তুর্কি ও ফরাসিসহ বিভিন্ন ভাষায় অনুবাদ করা হয়। বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা খোরশিদুল হক, ভারতের মাওলানা ইবরাহিম দেওলা।
বয়ানে ওলামায়ে কেরাম বলেন, যারা দুনিয়াতে দ্বীনের ওপর চলবে, ঈমানকে সুন্দর ও মজবুত করবে, আমলকে সুন্দর করবে, আল্লাহ তা’য়ালা তাদেরকে কামিয়াবি দান করবেন। ঈমান ও আমল ছাড়া দুনিয়া ও আখিরাতে কামিয়াব হওয়া যাবে না। ঈমান আমলের পাশাপাশি নামাজকে সুন্দর করতে হবে। আল্লাহকে পেতে হলে নামাজ পড়তে হবে। জাহান্নাম থেকে বাঁচতে এবং জান্নাত লাভের মাধ্যম হলো নামাজ। আরও বলা হয়, পরকালে শান্তি পেতে চাইলে ভালো আমল করতে হবে। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা মনোনিবেশ করে ঈমান, আখলাক ও দ্বীনের বিভিন্ন বিষয়ের বয়ান শোনেন। বয়ানে ওলামায়ে কেরাম বলেন, দাওয়াতের মেহনত হলো নবুওয়াতি মেহনত। এ মেহনত খুলুসিয়াত ও আজমতের সঙ্গে যারা করবে তাদের যেকোনো আমলের ফজিলত বহুগুণ বেড়ে যায়। বয়ানে বলা হয়, পরকালের চিরস্থায়ী সুখ শান্তির জন্য আমাদের প্রত্যেককে দুনিয়াতে জীবিত থাকা অবস্থায় দ্বীনের দাওয়াতের কাজে জানমাল দিয়ে মেহনত করতে হবে। ঈমান আমলের মেহনত ছাড়া কেউ হাশরের ময়দানে কামিয়াব হতে পারবে না।