বৈশ্বিক মোট প্লাস্টিক দূষণের ২.৪৭ শতাংশ হয় বাংলাদেশে : টিআইবি
বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে পলিথিন শপিং ব্যাগ ব্যবহার নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশে। যদিও অবাধে চলছে এর ব্যবহার। বিশ্বে যে পরিমাণ প্লাস্টিক দূষণ হয় তার মধ্যে দুই দশমিক ৪৭ শতাংশই হচ্ছে এখানে। এসব তথ্য জানিয়েছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান। একইসঙ্গে প্লাস্টিকের বেআইনি উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহার রোধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন সংশোধনের আহ্বান জানান তিনি।
আজ রোববার (৪ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন টিআইবি পরিচালক। বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে এই বিবৃতিতে দেন তিনি।
বিবৃতিতে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে ২০০২ সালে বাংলাদেশে পলিথিন শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হলেও পরিবেশ সংরক্ষণ আইন-১৯৯৫-এ সিঙ্গেল ইউজ (একবার ব্যবহার যোগ্য) প্লাস্টিক ও লেমিনেটেড প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়নি। এর ফলে প্লাস্টিক দূষণ অব্যাহত রয়েছে। বিষয়টি উদ্বেগজনক। অনতিবিলম্বে প্লাস্টিকের বেআইনি উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহার রোধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫-এর ৬ (ক) ধারা সংশোধন, দূষণকর আরোপ এবং প্লাস্টিক দূষণের সঙ্গে জড়িতদের জবাবদিহিতার আওতায় আনা উচিত।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে আইন করা হলেও কার্যকর প্রয়োগের অভাবে প্লাস্টিক থেকে পরিবেশ দূষণ শুধু অব্যাহত আছে। এটি উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। বৈশ্বিক মোট প্লাস্টিক দূষণের দুই দশমিক ৪৭ শতাংশ দেশে হয়ে থাকে।’
বিবৃতিতে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বর্জ্য ফেলার কারণে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা ও কর্ণফুলী নদী বাংলাদেশের অন্যতম দূষিত নদীতে পরিণত হয়েছে। প্লাস্টিক দূষণের কারণে আমাদের বাস্তুতন্ত্র ও ভূমির ব্যাপক দূষণ ঘটায়। গাছপালা ও অন্যান্য প্রাণীর অস্তিত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন। এ ছাড়া জৈব রাসায়নিক সারে প্রচুর পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকায়, তা কৃষিকাজে ব্যবহারের ফলে স্থায়ীভাবে মাটি দূষিত হচ্ছে।’
পরিবেশ দূষণ রোধে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ জানিয়ে টিআইবি পরিচালক বলেন, ‘প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন ও এর ব্যবহার হ্রাস এবং প্লাস্টিক বর্জ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য প্লাস্টিক দূষণসংক্রান্ত বিধিমালা অবিলম্বে প্রণয়ন করতে হবে। পাশাপাশি সম্ভাব্য ক্ষেত্রসমূহে প্লাস্টিকের ব্যবহার নিষিদ্ধ ও সীমিত করাসহ প্লাস্টিকের পরিবেশবান্ধব প্রাকৃতিক বিকল্প এবং বায়োডিগ্রেডেবল প্লাস্টিক উৎপাদনে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।’