চাষিদের আশা, আমের স্বাদে মাতবে দেশ
দেশের উত্তরের জেলা দিনাজপুরে আমের গাছগুলো এখন মুকুলে মুকুলে ভরা। আমগাছে মুকুলের পরিচর্যা করছেন বাগানমালিক ও আমচাষিরা।
বাগানগুলোতে ভরে যাওয়া মুকুলের সমারোহ দেখে এবার আমের বাম্পার ফলনের আশা করছে আম বাগানমালিক, আম ব্যবসায়ীসহ কৃষি অধিদপ্তর।
কৃষি অধিদপ্তর বলছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। গাছে থোকা থোকা মুকুলই বলে দিচ্ছে এবার আমের ভালো ফলন হবে এ জেলায়। আর তা হলে চাষিদের আশা, এ বছর দিনাজপুরের আমের স্বাদে মাতবে দেশ।
আর তাই দিনাজপুরের আমচাষিরা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন আমগাছের পরিচর্যায়। অনেকে ছত্রাক ও কীটনাশক স্প্রে করছে আমগাছে। লাভজনক ফল হওয়ায় অনেক চাষিই ধান ও অন্যান্য ফসলের জমিতে আমগাছ লাগিয়েছেন।
সদর উপজেলার আদর্শ কৃষক মতিয়ার রহমান জানান, ফসলি জমিতে আমবাগান লাগিয়ে বেশ লাভবান হওয়া যায়। আমের সঙ্গে সাথি ফসল হিসেবে ধান, গম, সরিষাসহ বিভিন্ন সবজি উৎপাদন করেও বাড়তি আয় হয়।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ জানিয়েছেন, দিনাজপুরের ১৩টি উপজেলায় এ বছর চার হাজার ৫৯০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হচ্ছে। জেলায় প্রায় ১০ থেকে ১৫ প্রজাতির আম চাষ হচ্ছে।
এর মধ্যে গোপালভোগ, সূর্যাপুরী, আম্রপালি, ল্যাংড়া, ফজলি, বউ ভুলানি, আসিনিয়া, ছাতাপড়া, চিনি ফজলি, সুরমাই, মিশ্রী ভোগ, কালা পাহাড়ি, গুটি, মধুচুষি, খিরশাপাতি উল্লেখযোগ্য।
প্রতি মৌসুমে এ জেলার আম বিক্রি থেকে অর্জিত হয় গড়ে ৪০ থেকে ৪৫ কোটি টাকা।
আমের মুকুলের ম ম ঘ্রাণে ভরে উঠেছে দিনাজপুরের গ্রামাঞ্চল। আর কয়েকদিন পরেই এসব আমের মুকুল থেকে আসবে থোকায় থোকায় আমের গুটি। আর আমের মুকুল রক্ষা ও রোগ-বালাই থেকে মুক্ত রাখতে নিয়মিত আমচাষিদের পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
এবার জেলা সদর, বিরল, কাহারোল, চিরির বন্দর, বোচাগঞ্জ, বীরগঞ্জ, পার্বতীপুর এলাকার আমবাগানগুলোতে মুকুলের সমারোহ। আম বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন আমবাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা।
এরই মধ্যে আগাম বিক্রি হয়েছে কিছু আমবাগান। তবে অনেক বাগানমালিক ভালো দামের আশায় অপেক্ষা করছেন। আমের ভালো ফলন এবং রং ঠিক রাখার জন্য এখন থেকে গাছের গোড়ায় পানি দিচ্ছেন।
মুকুল থেকে গুটি শুরু হওয়ায় ভিটামিন রিপকট স্প্রে করা হচ্ছে বলে বাগানমালিকরা জানিয়েছেন।
সব মিলিয়ে ভালো ফলন পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী এ জেলার আমচাষি বাগান মালিকদের। আর তাই সবাই এখন বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক প্রদীপ কুমার গুহ আরো জানিয়েছেন, এবার দিনাজপুরে ৪০ হাজার মেট্রিক টন আমের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।