ঘুমের মধ্যে রোগের প্রাদুর্ভাব, ঝুঁকি ও মুক্তির উপায় নিয়ে গবেষণা
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) বাংলাদেশে প্রাপ্ত বয়স্কদের ঘুমের মধ্যে রোগের প্রাদুর্ভাব, ঝুঁকি এবং স্বাস্থ্যের ক্ষতি নিয়ে প্রাথমিক গবেষণার ফলাফল ও প্রশিক্ষণের সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
আজ সোমবার (২৭ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ ডা. মিল্টন হলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসাতে বড় ধরণের ভূমিকা রাখবে বলে মতামত দেন বিশেষজ্ঞরা। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউর ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।
বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের যুগ্ম-সচিব (চিকিৎসা শিক্ষা অধিশাখা) মল্লিকা খাতুন। সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইসচ্যান্সেলর (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন।
সেমিনারে জানানো হয়, বাংলাদেশে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরা মধ্যে অনিদ্রা, নিদ্রাকালীন শ্বাস রোগ যেমন নাক ডাকা, অতিনিদ্রা, ঘুম সজাগ চক্রের ব্যাধি, ঘুম সংক্রান্ত চলাফেরা ও নড়াচড়া ব্যাধি, নিদ্রাকালীন অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহার ইত্যাদি রোগে ভুগছেন। এসব রোগের কারণে ডায়াবেটিস, স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। অনেকে ঠিক মতো ঘুম না হওয়ায় অফিসে কাজে অমনোযোগী থাকেন, মেজাজ খিটখিটে থাকে, কলিগদের সাথে দুর্ব্যবহার করে থাকেন। এই গবেষণাটি সম্পন্ন হলে এসব বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে। ঘুমের মধ্যে আরো কি কি সমস্যা ও রোগ রয়েছে এবং সে কারণে অন্যান্য রোগের উপর কি ধরণের প্রভাব ফেলছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে। যা ঘুমের সমস্যা সংক্রান্ত রোগের চিকিৎসা ও প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা রাখবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএসএমএমইউ ভিসি বলেন, ‘কৃষিতে গবেষণার মাধ্যমে ইরিবিরিসহ ফসল পাঁচ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে স্বাস্থ্যখাতে গবেষণার মাধ্যমে অনুরূপ সাফল্য এখনও পর্যন্ত দেখানো যায়নি। গবেষণার মাধ্যমে কৃষির মতো চিকিৎসা বিজ্ঞানসহ স্বাস্থ্যখাতেও রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে অনুরূপ সাফল্য নিশ্চিত করতে হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা অনেক দূর এগিয়েছে। করোনা পরীক্ষার কিট উদ্ভাবন করে ২৫০ টাকায় মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। করোনার দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাব নিয়ে গবেষণা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা সংক্রান্ত এন্টিবডির দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাব সংক্রান্ত গবেষণা কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অন্ধত্ব প্রতিরোধে গ্লুকোমা স্ক্রিনিং এবং এর ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। ফ্রেঞ্চ ফ্রাই, কোল্ড ড্রিংকস ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা হয়েছে।’
সভাপতির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (একাডেমিক) অধ্যাপক ডা. একেএম মোশাররফ হোসেন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা খাতে গবেষণার জন্য অব্যাহতভাবে উৎসাহ দিয়ে যাচ্ছেন। আজকের ঘুম সংক্রান্ত রোগ ও স্বাস্থ্যের ক্ষতি নিয়ে যে গবেষণা কার্যক্রমটি হাতে নেওয়া হয়েছে সেটাও প্রধানমন্ত্রীর শত কোটি টাকার সমন্বিত গবেষণা প্রকল্পেরই অংশ।