নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে আ.লীগ ও ছাত্রলীগনেতার বিরুদ্ধে দুটি মামলা
নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার মণ্ডতোষ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুর ইসলাম মিন্টু ও পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে আজ মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় পাবনার ৪নং আমলি আদালত এবং রাতে চাটমোহর থানায় পৃথক দুটি মামলা করা হয়।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতাউর রহমান ও চাটমোহর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন এই মামলা দুটির বাদী হন। তাঁরা দুজনে মামলার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আতাউর রহমান জানান, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে তিনি নিজে বাদী হয়ে মণ্ডতোষ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুর ইসলাম মিন্টুর বিরুদ্ধে ৪নং আমলি আদালতে (চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া) মামলা করেন।
আতাউর রহমান জানান, আরও জানান, আদালতের বিচারক ফারহানা ইয়ামীম মামলাটি আমলে নিয়ে শুনানি শেষে আসামির বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। আগামী ১৪ জানুয়ারি আসামি নুর ইসলাম মিন্টুকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গত ১৭ ডিসেম্বর ভাঙ্গুড়া উপজেলার মল্লিকচক গ্রামে স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে মতবিনিময় সভায় ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুর ইসলাম মিন্টু বক্তব্য দেন, ‘ভোট হবে একমাত্র নৌকার, এর বাইরে কোনো লোক বা এজেন্ট থাকবে না। আফসারের সাঙ্গপাঙ্গোদের হাড়-হাড্ডি ভেঙে এলাকা থেকে শেষ করে দিবেন’ এমন হুমকি ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। তাঁর এই বক্তব্য নির্বাচনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে মর্মে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি নির্বাচন কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তাঁর পরিপ্রেক্ষিতে বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করার নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন।
গতকাল সোমবার নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব (আইন) মো. আব্দুছ ছালাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।
এদিকে, একইভাবে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজের বিরুদ্ধে আজ মঙ্গলবার রাতে চাটমোহর থানায় পৃথক আরেকটি মামলা করা হয়েছে।
এ মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ২ ডিসেম্বর চাটমোহর উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত পথসভায় মিজানুর রহমান সবুজ ‘পাবনা-৩ আসনে মকবুল চাচা ছাড়া কেউ ভোট করতে পারবে না। যারা নৌকার বিরুদ্ধে অবস্থান করবে, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলাম’ এমন হুমকি ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। তাঁর এই বক্তব্য আচরণবিধির লঙ্ঘন মর্মে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটি নির্বাচন কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করে। তাঁর পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট থানায় এজাহার দায়েরের নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন। চিঠিতে ভাঙ্গুড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে এ নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই নির্দেশে মামলা করেন চাটমোহর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।
চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, ‘মামল হয়েছে। মামলা তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে।’
এ বিষয়ে মণ্ডতোষ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নুর ইসলাম মিন্টুর সাথে কথা বলতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিজানুর রহমান সবুজ বলেন, ‘মামলার বিষয়টি অবহিত হয়েছি। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আইনগতভাবেই আদালতে বক্তব্য উপস্থাপন করব। আর এই মামলা প্রমাণ করে এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে।’