‘২০ টাকা চাওয়ায় শিশুকে হত্যা করেন ভাবী’
হবিগঞ্জের মাধবপুরে শিশু হত্যার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তার ভাবীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, ২০ টাকা চাওয়ায় দেবর ইসমাইলকে গলা টিপে হত্যা করেন শাপলা বেগম।
এ ঘটনায় ইসমাইলের বাবা রজব আলী বাদী হয়ে পুত্রবধূ শাপলাকে আসামি করে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত শনিবার মাধবপুর পৌর শহরের পশ্চিমপাড়ার রজব আলীর ছেলে ইসমাইল (৫) নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে বাবা রজব আলী মাধবপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পুলিশ তার সন্ধানে অভিযান চালায়। সোমবার সকালে শিশু ইসমাইলের বড় ভাই জুয়েল মিয়া ঘরের ভেতর লাশের গন্ধ পেয়ে ঘর তল্লাশি করেন এবং ভাই ইসমাইলের লাশ দেখতে পান। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাটি জানানো হয় পুলিশকে। খবর পেয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা মনির হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে ধানের গোলার নিচ থেকে ইসমাইলের লাশ উদ্ধার করেন। পরে লাশের সুরতহাল তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য হবিগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়।
সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকারী উপপরিদর্শক (এসআই) দয়াল হরি জানান, ইসমাইলের কান, নাক দিয়ে রক্ত বের হওয়ার আলামত পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কালো দাগ রয়েছে।
লাশ উদ্ধারের পরপরই পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিহত শিশু ইসমাইলের বাবা রজব আলী, মা রহিমা বেগম, ভাই জুয়েল মিয়া ও ভাবী শাপলা বেগমকে থানায় নিয়ে যায়। থানায় তাঁদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। খবর পেয়ে আলাদাভাবে মাধবপুর যান হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ সুপার মাসুদুর রহমান মাসুদ। এ ছাড়া মাধবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ইসমাইলের লাশ উদ্ধারের খবর পেয়ে শত শত জনতা ঘটনাস্থলে ভিড় জমায়।
সোমবার দিবাগত গভীর রাতে থানায় পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে শিশু ইসমাইলকে হত্যার কথা স্বীকার করেন শাপলা বেগম। শাপলা পুলিশকে জানান, ২৬ মার্চ সকালে ইসমাইল তার কাছে ২০ টাকা চায়। শাপলা ২০ টাকা না দিলে ইসমাইল তাকে গালি দেয়। এতে শাপলা রাগান্বিত হয়ে ইসমাইলকে খাটের ওপর ফেলে গলা টিপে ধরেন। এতে ইসমাইল মারা যায়। এ সময় সে পায়খানা করে দিলে শাপলা তার প্যান্ট ও শার্ট খুলে ধানের গোলার নিচে লুকিয়ে রাখেন। এ পরিস্থিতিতে শাপলা পরিকল্পনা করেছিলেন, রাতের কোনো একসময় তার মৃতদেহ পানিতে ফেলে দেবেন। কিন্তু রাতে সে সুযোগ পাননি শাপলা।
শাপলার স্বীকারোক্তির পর ইসমাইলের মা-বাবা ও ভাইকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।