কূটনৈতিক বেড়াজাল ভেঙে সন্তান যাচ্ছে মায়ের কাছে
পাকিস্তানি বালক রমজান মোহাম্মদ (১৫) পাঁচ বছর ধরে ভারতে আটকে আছে। কূটনৈতিক বেড়াজালে সে পাকিস্তানে মায়ের কাছে ফিরতে পারছে না। দীর্ঘ কয়েক বছরের চেষ্টার পর অবশেষে বাংলাদেশ হয়ে মায়ের কাছে ফিরে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে রমজান।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, যথাযথ কাগজপত্র না থাকায় পাকিস্তান ফিরতে পারছিল না রমজান মোহাম্মদ। এখন ভারতীয় কর্তৃপক্ষ তাকে বাংলাদেশে পাঠানোর চেষ্টা করছে। আশা করা হচ্ছে, এখানে থেকে কাগজপত্র করে সে একসময় পাকিস্তানের করাচি ফিরে যেতে পারবে।
প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ২২ সেপ্টেম্বর রমজানকে ভূপালের রেলস্টেশনে পাওয়া যায়। পরে তাঁর আশ্রয় হয় স্থানীয় শিশুনিবাস ‘চাইল্ডলাইনে’। জানা যায়, রমজানের পরিবার বাংলাদেশি হলেও পাকিস্তানে বসবাস করছিল। মাত্র ১০ বছর বয়সী রমজানকে নিয়ে বাংলাদেশে চলে আসেন তাঁর বাবা কাজল মোহাম্মদ। সেখানে তাঁর বাবা আবার বিয়ে করেন। সৎমায়ের হাতে নির্যাতিত রমজান মোহাম্মদ পাকিস্তানের করাচি ফেরার উদ্দেশে ২০১১ সালে একা একা সীমান্ত পার হয়ে ভারতে চলে যায়।
পত্রিকার রমজানের খবর পড়ে আগ্রহ প্রকাশ করেন ভূপালের ১৯ বছর বয়সী শিক্ষার্থী হামজা বাসিত। রমজানকে মায়ের কাছে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, এনজিও ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সহায়তায় রমজানের মায়ের খোঁজ করেন হামজা।
দীর্ঘ চেষ্টার পর রমজানের মায়ের খোঁজ পেয়ে তাঁর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন হামজা। পরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও রমজানকে পাকিস্তানের করাচি পাঠাতে রাজি হয়। তবে, পাকিস্তানের নাগরিক হিসেবে রমজানের পর্যাপ্ত কাগজপত্র না থাকায় বিষয়টি বেশিদূর এগোয়নি।
ভূপালের শিশুনিবাসের পরিচালক অর্চনা সাহা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, রমজানের মা তাকে বাংলাদেশে পাঠানোর কথা বলেন। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে তাঁকে কলকাতা পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
গত বৃহস্পতিবার কলকাতায় পৌঁছে রমজান টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলে, সে বাবার কাছে ফিরতে আগ্রহী নয়। তবে বাংলাদেশে ফিরে গেলে সে হয়তো পাকিস্তান ফেরত যাওয়ার সুযোগ পাবে।
সংলাপ নামক সংগঠনের কর্মকর্তা তপোথি ভৌমিক রমজানকে কলকাতায় নিয়ে গেছেন। তিনি বলেন, ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া চলাকালীন রমজানকে চব্বিশ পরগনার একটি বাড়িতে রাখা হবে।