দ্বিতীয় ধাপের প্রচার-প্রচারণা শেষ, ভোটগ্রহণ কাল
ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয়ধাপের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা রোববার মধ্যরাতে শেষ হয়েছে। এই ধাপের ১৫৬ উপজেলায় আগামীকাল মঙ্গলবার (২১ মে) ভোটগ্রহণ হবে। সকাল আটটায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে শেষ হবে বিকেল চারটায়।
এই ধাপে তিনটি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ১ হাজার ৬৩৫জন প্রার্থী। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে ৬০৩জন, ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ৬৯৩জন এবং মহিলা ভাইস-চেয়ারম্যান পদে ৫২৮জন। তবে ভোটের আগেই তিনটি পদে ২২জন বিনাভোটে নির্বাচিত হয়েছেন। এর মধ্যে দুটি উপজেলার তিনটি পদে কোন ভোটগ্রহণ করা লাগবে না। উপজেলা দুটি হলো-কুমিল্লা জেলার কুমিল্লা আদর্শ সদর এবং চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলা।
এ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করার লক্ষ্যে এই ধাপে সারাদেশে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৪৫৭ প্লাটুন মোতায়েন করা হয়েছে। আগামী ২৩ মে পর্যন্ত নির্বাচনি এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে বিজিবি মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবে।
ভোট কম পড়ার কারণ হিসাবে রোববার দুপুরে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, ভোট কম পড়ার পেছনে একটি বড় কারণ বিএনপি। কারণ, তারা ভোট বর্জন করায় তাদের কর্মী-সমর্থকরা ভোট দিতে কেন্দ্রে আসছেন না। তবে বিএনপিই একমাত্র কারণ না। আরেকটা বড় কারণ হলো স্থানীয় নির্বাচনে ভোটাররা চাকরিস্থল থেকে ভোট দিতে আসতে চায় না।
রোববার দিনগত রাত ১২টায় শেষ হয়েছে এই ধাপের প্রচার-প্রচারণা। নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী ভোটগ্রহণের ৩২ ঘণ্টা আগেই সবধরণের প্রচার-প্রচারণা বন্ধ থাকে। আগামীকাল (২১ মে) দ্বিতীয় ধাপের ১৫৬ উপজেলায় ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। সেই হিসাবে রোববার রাত ১২টার পর অর্থাৎ আজ থেকে প্রার্থীরা কোন ধরনের প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারবেন না।
সোমবার দিনগত রাত ১২টা থেকে আগামীকাল মঙ্গলবার অর্থাৎ ভোটগ্রহণের দিন রাত ১২টা পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি এলাকায় ট্যাক্সিক্যাব, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাক, লঞ্চ, ইঞ্জিনচালিত বোটসহ (নির্দিষ্ট রুটে চলাচলকারী ব্যতীত) অন্যান্য যানবাহন চলাচলের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এ ছাড়া ইতোমধ্যে মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ রয়েছে। আগামী বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত এ নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
১৩ হাজার ১৬ কেন্দ্রের ৯১ হাজার ৫৮৯ ভোট কক্ষে ৩ কোটি ৫২ লাখ ৪ হাজার ৭৪৮ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। এরমধ্যে পুরুষ ১ কোটি ৭৯ লাখ ৫ হাজার ৪৬৪, নারী ১ কোটি ৭২ লাখ ৯৯ হাজার ৪৭ এবং ২৩৭ জন হিজড়া ভোটার রয়েছেন। ভোটে মোট পুলিশ মোতায়েন থাকবে ৮৯ হাজার ৮৬৩জন। এছাড়া ১লাখ ৯৩ হাজার ২৮৭জন আনসার সদস্য ভোটের দায়িত্বে থাকবেন।
সুষ্ঠু নির্বাচনের লক্ষ্যে গঠিত বিভিন্ন টিমের বিষয়ে ইসির এক নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ভিজিল্যান্স টিম ও অবজারভেশন টিম, মনিটরিং টিম ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সেল গঠন এবং উক্ত টিমসমূহের কার্যক্রম নির্ধারিত তিনদিন পর পর বা ক্ষেত্রমতো তাৎক্ষণিক নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে অবহিত করতে হবে। রিটার্নিং কর্মকর্তা টিমসমূহ কর্তৃক নির্বাচন কমিশন সচিবালয়কে অবগত করানোর জন্য নির্দেশনা দেবেন। এ ছাড়া উপজেলা নির্বাচনের সামগ্রিক কার্যক্রম শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকল্পে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।